শুক্রবার, ৩রা অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** তেহরান থেকে রাজধানী অন্যত্র সরিয়ে নেবে ইরান, নেপথ্যে পানি *** গাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের *** ৪৭ দেশের ৪৪৩ স্বেচ্ছাসেবীকে অপহরণ করেছে ইসরায়েল *** মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরলেন দুর্গতিনাশিনী *** শহিদুল আলমের জাহাজ এখনো আটক হয়নি, দিলেন ভিডিওবার্তা *** পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু *** এনসিপিকে শাপলা দিলে মামলা করব না, তবে ইসি দিতে পারে না: মান্না *** শুধু থালাবাটি নয়, এনসিপির জন্য আছে লাউ-বেগুন-কলাসহ ৫০ প্রতীক *** ঝড় উপেক্ষা করে গাজার পথে ফ্লোটিলা, শহিদুল আলমের ভিডিও বার্তা *** ইসরায়েলি সব কূটনীতিককে কলম্বিয়া থেকে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রেসিডেন্ট পেত্রোর

সমাপ্তির পথে চীনের ভূ-রাজনৈতিক উত্থান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৩৬ অপরাহ্ন, ২৮শে আগস্ট ২০২৩

#

প্রতীকী ছবি

সাম্প্রতিক সময়ে চীন গুরুতর অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। চীনের এই অর্থনৈতিক সমস্যাগুলো এটির ভূ-রাজনৈতিক উত্থান যে সমাপ্তির দিকে তা নির্দেশ করছে। সম্প্রতি এ নিয়ে ভারতের বেঙ্গালুরে অবস্থিত তক্ষশীলা ইনস্টিটিউটের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক নিতিন পাই একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। 

সোমবার (২৮ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ‘লাইভমিন্ট’ এ নিতিন পাইয়ের সেই প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে। 

প্রবন্ধে নিতিন পাই বলেছেন যে, গত কয়েক সপ্তাহের পর্যালোচনা থেকে বলা যায় যে, সম্প্রতি চীনের অর্থনীতি গুরুতর সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এবং খুব শীঘ্রই দেশটি অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে পারে। দেশটিতে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় বড় ধরনের পতন ঘটার আশঙ্কা এখন সকলের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। দেশটিতে মোট অ্যাপার্টমেন্টের পাঁচ ভাগের এক ভাগ এখনো অবিক্রিত। এরকম পরিস্থিতিতে দেশটির আঞ্চলিক প্রশাসন কিভাবে ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ ঋণ পরিশোধ করবে তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ ঋণের অর্থ দেশটির আঞ্চলিক প্রশাসন বিভিন্ন অঞ্চলে সেতু এবং বিমানবন্দর নির্মাণে ব্যয় করেছে।

এছাড়া দেশটিতে প্রতি পাঁচজন যুবকের মধ্যে একজন বেকার। চীনের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশের কাছাকাছি হতে পারে এবং এই দশকের শেষদিকে তা ২ শতাংশে নেমে যেতে পারে। গত কয়েক বছরে, বেইজিং বিশ্বব্যাপী নিজেদের রাজনৈতিক প্রভাব তৈরির জন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোকে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। তবে এ ঋণের অধিকাংশই এখনো ফেরত পায়নি দেশটি।

প্রবন্ধটিতে আরো বলা হয়েছে, বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক সূচক অনুযায়ী, চীনের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন খারাপের দিকে যাচ্ছে। চীনের নাগরিক এবং বেসরকারি সংস্থাগুলো এখন কি করছে তা থেকে এব্যাপারে আরো স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যায়। দেশটিতে বসবাসকারী নাগরিকরা এখন ব্যাংকে টাকা সঞ্চয় করছে এবং তারা তাদের সঞ্চয় বৃদ্ধির ইচ্ছা পোষণ করেছে। তারা তাদের অর্থ ব্যয়ও করছে না, আবার বিনিয়োগও করছে না। ২০১৫ সালে চীনে যে পরিমাণ বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল তা এখন এক তৃতীয়ায়শে নেমে এসেছে। 

অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম পোজেন সম্প্রতি তার একটি প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন যে, চীন বসবাসকারী নাগরিকরা এবং সেখানকার কোম্পানিগুলো দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তারা বিনিয়োগকৃত অর্থ হারানোর ভয় পাচ্ছেন। একারণে তারা বিনিয়োগ না করে অর্থ সঞ্চয় করছেন। বিনিয়োগ করলেও তা স্বল্পমেয়াদে করছেন। 

এব্যাপারে নিতিন পাই পল ক্রুগম্যানের ‘মিনস্কি মোমেন্ট’এর কথা তুলে ধরেন। নিতিন পাই বলেন, চীন এখন মিনস্কি মোমেন্টে আছে। যদি চীন এই অর্থনৈতিক সংকট কাটাতেও পারে তবুও তার অর্থনৈতিক পুনরুত্থান আর সম্ভব হবে না। 

প্রবন্ধে নিতিন পাই চীনের বর্তমান অর্থনৈতিক সমস্যার কারণ সম্পর্কে বলেছেন, ২০১৮ সালের মার্চ মাসে শি জিনপিং আমৃত্যু রাষ্ট্রপতি থাকার জন্য দেশটিতে আইন পাশ করেছিলেন। মূলত সেসময়ই চীনের অর্থনৈতিক পতনের ঘন্টা বেজেছিল। কেননা দেং জাওপিং চীনের সফলতার জন্য যে সূত্র দিয়েছিলেন, শি জিনপিং তার উল্টোপথে চলা শুরু করেছিলেন। মাও সেতুংয়ের ব্যর্থতার দিকে ফিরে গেছেন শি জিনপিং। দেং জাওপিং চীনের উন্নতির জন্য যে নীতি প্রবর্তন করেছিলেন তাতে প্রাতিষ্ঠানিক দলীয় শাসন, উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং বহির্বিশ্বের জন্য উন্মুক্ততা ছিল। শি জিনপিং ক্ষমতায় আসার পর এ তিনটি বিষয়কেই ধ্বংস করেছেন।

বর্তমানে চীন প্রাতিষ্ঠানিক দলীয় শাসন থেকে ব্যক্তিগত শাসনে চলে গেছে। শি জিনপিং প্রশাসন দেশের পুরো অর্থনীতিকে গলা টিপে হত্যা করেছেন। তারা বেসরকারি উদ্যোক্তা, বিনোদন শিল্পী, প্রযুক্তি শিল্পের কর্ণধার এবং বিদেশী নির্বাহীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করেছেন এবং দেশটির অর্থনীতিতে অবদান রাখা বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের সরিয়ে দিয়েছেন। শি জিনপিং এর শাসনামলে চীন তার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে বিবাদে জড়িয়েছে। একই সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও বাণিজ্যযুদ্ধে জড়িয়েছে দেশটি। 

এটা চীনের নাগরিকদের জন্য দুর্ভাগ্য, কেননা তারা এমন একজন নেতার দ্বারা শাসিত হচ্ছে যে নিজেকে সবসময় নির্দোষ  মনে করে এবং কখনো নিজের ভুল স্বীকার করে না। শি জিনপিং তার ভুল সংশোধনে কখনো তৎপর নন। তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) চীনের জন্য একটি ভুল পদক্ষেপ ছিল। এর আওতায় চীন যে ঋণগুলো দিয়েছে তার অধিকাংশই এখনো দেশটি ফেরত পায়নি। বিআরআই যে একটি ভুল পদক্ষেপ ছিল তা বোঝার পরও শি জিনপিং এটি থেকে সরে আসেননি। 

চীনের এই দুর্দশা কমাতে পারে বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। একারণে দেশটির নাগরিক এবং কোম্পানিগুলোকে নিজেদের সমস্যা চিহ্নিত করা এবং তা থেকে উত্তরণের সুযোগ দিতে হবে। যখন তারা এ সুযোগ পাবে তখন চীনের অর্থনীতি আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসবে। কিন্তু রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণের জন্য শি জিনপিং নিজের পছন্দকে দেশের মানুষদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন। একারণে চীনের অর্থনীতি এগিয়ে যাওয়ার বদলে পেছন দিকে যাচ্ছে। 

ওয়াল স্ট্রীট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বেইজিং প্রশাসন এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন যে, যদি দেশটির নাগরিকদের তাদের অর্থ নিজেদের ইচ্ছামতো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয় তবে রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ক্ষুন্ন হতে পারে।”  

অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম পোজেন চীনের অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণের ব্যাপারে বলেছেন, “যদি চীনের সরকার দেশটির নাগরিক এবং কোম্পানিগুলোকে আশ্বস্ত করতে পারে যে তাদের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানে সরকারের অনুপ্রবেশে সীমাবদ্ধতা রয়েছে তবেই দেশটি এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ লাভ করতে পারবে।” 

এম.এস.এইচ/


চীন শি জিনপিং বেইজিং

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

ঢাকাসহ ৯ জেলায় ঝড়ের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর

🕒 প্রকাশ: ০১:২৮ অপরাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৫

ফ্লোটিলার ৪৭০ অধিকারকর্মীকে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে ইসরায়েল

🕒 প্রকাশ: ০১:১৮ অপরাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৫

যাকে হত্যার অভিযোগে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আসামি, দুই বছর পর সেই নারীকে পাওয়া গেল জীবিত!

🕒 প্রকাশ: ০১:১১ অপরাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৫

আটক ফ্লোটিলার অধিকারকর্মীদের মুখের ওপর ‘সন্ত্রাসী’ বলে তিরস্কার করলেন ইসরায়েলি মন্ত্রী

🕒 প্রকাশ: ০১:১০ অপরাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৫

আপত্তিকর ভিডিও! গুগল-ইউটিউবের কাছে ৪ কোটি রুপি দাবি অভিষেক–ঐশ্বরিয়ার

🕒 প্রকাশ: ০১:০০ অপরাহ্ন, ৩রা অক্টোবর ২০২৫

Footer Up 970x250