ছবি: সংগৃহীত
বাণিজ্যিকভাবে শেরপুর জেলায় শুরু হয়েছে তুলা চাষ। এর আগে ২০১৫ সালে জেলায় প্রথমবারের মতো তুলা চাষ শুরু হয়। সেবছর চাষীরা সিবি-১২ ও রুপালী-১ জাতের তুলা চাষ করেছিলেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হওয়া, ভালো ফলন ও লাভবান হওয়ায় তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
জেলা সদরের টালিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক ফরিদ মিয়া (৫০)। গত বছর বাড়ির পতিত জমিতে চাষ করেছিলেন তুলার। লাভবান হওয়ায় এবছর নতুন করে ২ বিঘা জমিতে তুলার চাষ করেছেন। এখন চলছে তুলা সংগ্রহের কাজ। তিনি জানান, চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, অতিবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া এবং রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম থাকায় তুলার বাম্পার ফলন হয়েছে।
কৃষক ছানোয়ার হোসেন (৪৫) বলেন, উৎপাদন খরচ কম ও তিনগুণ লাভ হওয়ায় নিজের জমি বা অন্যের জমি লীজ নিয়ে তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছি আমরা। তুলা আমাদের কাছে সাদা সোনা। তাই সরকারি প্রণোদনা, তুলা উন্নয়ন বোর্ডের পরামর্শ এবং সহযোগিতায় তুলা চাষে দিন দিন আমাদের আগ্রহ বাড়ছে।
এছাড়া অন্য ফসলের চেয়ে কম খরচে তুলা চাষে অধিক লাভ এবং চাষ পরবর্তী অন্য ফসল আবাদে ভাল ফলনে জেলায় তুলা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে বলে জানান, এই তুলা চাষী। একই গ্রামের কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক বিঘা জমিতে তুলা চাষে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। দেশি তুলাতে বিঘা প্রতি ১২ মণ এবং হাইব্রিড ১৫ মণ ফলন পাওয়া যায়। যেখানে প্রতি মন তুলা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকায়। এছাড়া তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় মিল মালিকরা সরাসরি তুলা চাষীদের ক্ষেত থেকে তুলা ক্রয় করছে। অর্থাৎ এক বিঘা জমিতে দেশি তুলা চাষ করে উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও ৩০ হাজার টাকা এবং হাইব্রিড জাতের তুলায় ৪০ হাজার টাকার বেশি লাভ থাকছে কৃষকের।
আরও পড়ুন: ভুট্টা চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা
তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জেলায় ৫’শ জন চাষি ২১৫ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করেছেন, যা গতবারের চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি। এ বছর উচ্চফলনশীল জাত হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২, সিবি- ১২, সিবি- ১৪, রুপালী-১ ও শুভ্র জাতের তুলা বেশি চাষ হয়েছে। চলতি বছর আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম চড়া হওয়ায় দেশের বাজারেও বেড়েছে পণ্যটির দাম। এর ফলে কৃষকেরা এখন নগদ মূল্যে তুলা বিক্রি করতে পারছেন। তাই বাম্পার ফলন ও ভালো দামে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।
সদরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, জেলার চরাঞ্চলে তুলা অনেক ভালো হয়। তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আমরা উপ-সহকারী কৃষি অফিসাররা মাঠের কৃষকদের সব সময় বিভিন্ন সমস্যার জন্য পরামর্শ দিয়ে আসছি।
এসি/কেবি
খবরটি শেয়ার করুন