ছবি: সংগৃহীত
জনপ্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার বুধবার সন্ধ্যায় রটে যাওয়া তার মৃত্যুর গুঞ্জনটিকে মিথ্যা প্রমাণ করেছিলেন। তবে রাত পোহাতেই সকাল বেলায় একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশের অন্যতম রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার গুঞ্জনটি সত্যি করে বেদনা ছড়িয়ে দিলেন। শেষ পর্যন্ত ‘নাই টেলিফোন, নাইরে পিয়ন, নাইরে টেলিগ্রাম’-এর দেশে পাড়ি জমালেন ৭২ বছর বয়সের এই কিংবদন্তি।
বৃহস্পতিবার (১২ই ডিসেম্বর) সকাল আটটায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। খবরটি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর স্বামী সারওয়ার আলম। তিনি জানান, মরদেহ আজ (বৃহস্পতিবার) বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। কাল, ১৩ই ডিসেম্বর শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
শিল্পীর দুই মেয়ে জারা ও জিশান আমেরিকা ও কানাডায় থাকেন। তারা দুজনই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। আজই (১২ই ডিসেম্বর) ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে তাদের।
কয়েক বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন পাপিয়া সারোয়ার। নভেম্বরে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সর্বশেষ তেজগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। শেষদিন পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পাপিয়া সারোয়ারের জন্ম বরিশালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্রসংগীতে ডিগ্রি নিতে সে দেশে যান। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনিই প্রথম ভারত সরকারের বৃত্তি নিয়ে সেখানে স্নাতক করার সুযোগ পান।
আরও পড়ুন: শীতে প্রেমিক না থাকায় আফসোস শ্রীলেখার!
তার আগে তিনি ১৯৬৬ সালে ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক, সন্জীদা খাতুন ও জাহেদুর রহিমের কাছে এবং পরে বুলবুল ললিতকলা অ্যাকাডেমিতে সংগীতে দীক্ষা নেন। ১৯৯৬ সালে ‘গীতসুধা’ নামে একটি গানের দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।
দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারে রবীন্দ্র-গানের জন্য কোটি শ্রোতার ভালোবাসা তিনি পেয়েছেন। আধুনিক গানেও আছে তার সাফল্য। বিশেষ করে ‘নাই টেলিফোন’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়ে এই শিল্পী গোটা বাংলার কাছে জনপ্রিয় হয়ে আছেন। ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার লাভ করেন। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ লাভ করেন। ২০২১ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।
এসি/ আই.কে.জে/