সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈসাবি উৎসব ঘিরে পাহাড়ি পল্লীতে চলছে আনন্দ-উচ্ছ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ১২:৪৭ অপরাহ্ন, ৮ই এপ্রিল ২০২৪

#

ছবি- সংগৃহীত

পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসবের আমেজে ভাসছে খাগড়াছড়ি। শহর, শহরতলী থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত পাহাড়ী পল্লীতেও চলছে আনন্দ উচ্ছ্বাস। আর এই উৎসবকে ঘিরে উৎসবের নগরে পরিণত হয়েছে এই পার্বত্য জনপদ। ইতোমধ্যে পাড়া-মহল্লায় বৈসাবি ঘিরে চলছে প্রস্তুতি। চলছে ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলা,গান-বাজনা।

ইতোমধ্যে বৈসু, সাংগ্রাই ও বিজু উৎসব উপলক্ষ্যে খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত পল্লী হতে শহর ও শহরতলীতে শুরু হয়েছে বিজু মেলা,সাংস্কুতিক অনুষ্ঠান এবং খেলাধুলা। হাট-বাজারগুলোতে পড়েছে কেনা-কাটার ধুম। এবার বৈসাবি’র সাথে ঈদ-উল ফিতর পাহাড়ে উৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ফলে খাগড়াছড়িতে সারা বছর কম-বেশি পর্যটকের উপস্থিতি থাকলেও এবার টানা ছুটিতে তা কয়েকগুণ বেশি হওয়ার আশা করছেন সংশিষ্টরা। ইতোমধ্যে খাগড়াছড়ি ও সাজেকের অধিকাংশ হোটেল-কটেজ বুকিং হয়ে গেছে।

বৈসাবি মানেই রঙে বর্ণে বৈচিত্র্যময় এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু, যে নামেই বলা হোক না কেন, এই উৎসব যেনো পাহাড়ীদের প্রেরণা-পাহাড়ের জাগরণ। আগামী ১২ এপ্রিল নদীতে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে মূল উৎসব শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তার আগেই উৎসব শুরু হয়ে গেছে।

১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছে। যা সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ‘ত্রিপুরা ভাষায় বৈসুক, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু’ নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’নামকরণ করা হয়। প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি পাহাড়ের বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ঐতিহ্যবাহী দিনটি পালন করে থাকে।

আগামী ১২ এপ্রিল নদীতে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে চাকমা সম্প্রদায় ফুল বিজু পালন করবে। ১৩ এপ্রিল মূল বিঝু আর পরের দিন ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা পালন করবে। এ সময় ঘরে ঘরে চলবে অতিথি আপ্যায়ন। একই সাথে ১৩ এপ্রিল ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারিবৈসু,বিযুমা,বিচিকাতাল। 

১৪ এপ্রিল মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাইং উৎসব। মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইং উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা নানা রংয়ে রঙিন হয়ে উঠে। এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো মারমা জনগোষ্ঠীর বর্ণাঢ্য সাংগ্রাইং র‌্যালি ও জলকেলি বা জলোৎসব। সকালে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ক্যং ফুল পূজার মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই উৎসবের সূচনা হয়।

মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা জলোৎসবে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করে। মার্মা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল দুঃখ-গ্লানি ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে।

আই.কে.জে/


বৈসাবি উৎসব

খবরটি শেয়ার করুন