ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
বিশ্ব ইজতেমায় যে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে এবার সিরিয়া, মিয়ানমারসহ বেশ কয়েকটি দেশের মুসল্লিদের জন্য ভিসা কড়াকড়ির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরেকার।
বিশেষ করে বিশ্বের যেসব দেশে উগ্রধর্মীয় গোষ্ঠী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত, ওইসব দেশের অতিথিদের আসার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে; যা তাবলিগ জামাতকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে এক সভায় এমন সিদ্ধান্ত হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেকোনো পরিস্থিতি এড়াতে সিরিয়াসহ কয়েকটি দেশের আবেদনকারীদের জমা দেওয়া নথিপত্র যাচাইয়ের পর ভিসা দিতেও নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিদেশি অতিথিদের ভিসা দেওয়ার আগে শুরায়ে নিজাম বা তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের আমন্ত্রণপত্র এবং সংশ্লিষ্ট দেশের মারকাজের সুপারিশ যাচাই করে করা হবে। তথ্য-উপাত্ত সঠিক পাওয়া গেলেই কেবল ভিসা দেওয়া হবে।
টিআই ভিসা নিয়ে মিয়ানমারের নাগরিকরা ইজতেমায় আসতে পারবে। তবে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত ৪ঠা নভেম্বর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত হয়, বিদেশি মেহমানদের তালিকা, নাম, পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয়তা, জন্মতারিখ, পাসপোর্ট ইস্যুর তারিখ এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখসহ সব তথ্য আগামী ২০শে ডিসেম্বরের আগে শুরায়ে নিজাম বা তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ কর্তৃক এসবিকে সরবরাহ করতে হবে।
আরও সিদ্ধান্ত হয়, যেসব দেশের উগ্রধর্মীয় গোষ্ঠী ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছে, ওইসব দেশের মেহমানদের বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে তাবলিগ জামাত শুরার মাধ্যমে নিরুৎসাহিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ভিসা অন-অ্যারাইভাল দেওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
ভিসা অন অ্যারাইভাল, প্রদেয় ভিসার মেয়াদ, নো ভিসা ফি রিকোয়ার্ড, বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতির যোগাযোগ নাই এমন দেশের মুসল্লিদের ভিসা দেওয়ার বিষয়গুলো দেখাশোনার জন্য সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের (নিরাপত্তা ও বহিরাগমন) নেতৃত্বে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
গত ৩রা ডিসেম্বর ইজতেমায় বিদেশি অতিথিদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন শর্তের কথা উল্লেখ করে বিদেশে বাংলাদেশের সব মিশনে চিঠি পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।
সেখানে বলা হয়, যেকোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে সিরিয়া, ইয়েমেন, নাইজেরিয়া, ইরাক, সোমালিয়া, লেবানন, আফগানিস্তান, সুদান, লিবিয়া, চাদ, মালি, তিউনিসিয়া, ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মতো দেশগুলোর আবেদনকারীদের জমা দেওয়া প্রাসঙ্গিক নথিপত্র যথাযথভাবে যাচাইয়ের পর ভিসা দেওয়া যেতে পারে।
বিশ্ব ইজতেমায় আসা বিদেশি মেহমানদের অনুকূলে সাধারণভাবে ৩০ দিন পর্যন্ত ভিসা দেওয়া হয়। তবে বিশেষ ক্ষেত্রে তাবলিগ জামাতের সুপারিশের ভিত্তিতে এক চিল্লার জন্য ৫০ দিন এবং তিন চিল্লার জন্য ১৩০ দিন ভিসা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় থাকে।
বিশ্ব ইজতেমা প্রথম পর্বে আগামী ৩১শে জানুয়ারি থেকে ২রা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাবলিগ জামাতের মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়েরের অনুসারীরা (শুরায়ী নেজাম) আয়োজন করবেন।
আগামী ৭ থেকে ৯ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীরা আয়োজন করবেন। টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরেই হবে দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা।
ওআ/কেবি
খবরটি শেয়ার করুন