বুধবার, ৩রা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৮ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নগরমুখী মানুষের স্রোত ঠেকাতে জরুরি নাগরিক সুবিধার বিকেন্দ্রীকরণ

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০২:১৮ অপরাহ্ন, ২৮শে মে ২০২৪

#

প্রতিকী ছবি - সংগৃহীত

দেশে নগরমুখী মানুষের সংখ্যা এতটাই অস্বাভাবিক গতিতে বাড়ছে যে, বর্তমানে নগরে বাস করছে ৫ কোটিরও বেশি মানুষ। গণমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, বর্তমানে দেশের ৩৩ শতাংশ মানুষ তথা দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশই এখন নগরে বসবাস করছেন। নগর গবেষণা কেন্দ্রের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সম্প্রতি রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘নগরায়ণে বাংলাদেশ ও নগর পরিবেশ’ শিরোনামে দিনব্যাপী সম্মেলনে বিশিষ্টজনরা শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, মূলত বড় শহরগুলো ছাড়া অন্যত্র নাগরিক সুবিধা তেমন না থাকায় দেশের প্রতিটি এলাকার মানুষ নগরমুখী হচ্ছে। ফলে সেবা সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় নাগরিক সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ অবস্থার অবসানে দ্রুত বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই বলেও মত দিয়েছেন তারা।

শহরে আয়ের সুযোগ থাকায় নিম্নবিত্তদের কেউ কেউ গ্রামাঞ্চল থেকে যেমন শহরমুখী হন, তেমনই স্বাস্থ্য-শিক্ষার মতো সুযোগ-সুবিধা অন্যান্য জেলা শহরে না থাকায় নগর অনেকেরই আকর্ষণ ও প্রয়োজনের জায়গা। নগর গবেষকরা দীর্ঘদিন ‘জাতীয় নগর নীতিমালা’ প্রণয়নের দাবি জানিয়ে এলেও সেটা আলোর মুখ দেখেনি। ঢাকার ক্ষেত্রে বলা যায়, অধিক মানুষ শহরমুখী হওয়ায় অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে একদিকে নগরবাসীকে প্রতিনিয়ত পানি ও বায়ুদূষণ, অধিক তাপমাত্রা, জলাবদ্ধতা, যানজট ও স্বাস্থ্য সংকটের শিকার হতে হচ্ছে; অপরদিকে এত মানুষের সমাগমের কারণে রাজধানীতে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে আর সবুজের পরিমাণ কমছে। ঢাকা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এ শহর একটি উন্মুক্ত বস্তিতে পরিণত হতে চলেছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের সবকিছুই নগরকেন্দ্রিক। এর থেকে বের হতে না পারলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। ফলে বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে নগরের বাইরেও নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং অবকাঠামো খাতে উন্নয়নের বিকল্প নেই। আবার গ্রাম উন্নয়নে শুধু প্রকল্প গ্রহণ করলেই হবে না, জীবনযাপনে সব প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি বিস্তার ঘটাতে হবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের, যেন গ্রামের মানুষ আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়।

আই.কে.জে/

নগরমুখী মানুষের স্রোত

খবরটি শেয়ার করুন