শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এসএসসি পাস শিক্ষার্থীদের এক কেজি মিষ্টি আনতে স্কুলের নোটিশ!

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:০৭ পূর্বাহ্ন, ১৫ই মে ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সেন্ট মার্থাস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের এক কেজি করে মিষ্টি বিদ্যালয়ে নিয়ে আসার নোটিশ প্রদানকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা করছেন অনেকেই। রোববার (১২ই মে) বিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে এই নোটিশটি আপলোড করা হয়।

নোটিশে লেখা রয়েছে, সেন্ট মার্থাস উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পিতা-মাতা/অভিভাবকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামী ১৩/০৫/২০২৪ রোজ সোমবার, এসএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য শিক্ষার্থী, শিক্ষকমণ্ডলী এবং বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের নিয়ে আনন্দ করা হবে। কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের এক কেজি করে মিষ্টি নিয়ে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।


এদিকে মিষ্টি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই নোটিশটি ফেসবুকে আপলোড করে স্কুল কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করছেন।

আরো পড়ুন : মায়ের মুখের পড়া মুখস্থ করে যেভাবে এসএসসিতে সফল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ঐতি

আমজাদ হোসেন নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, এ কেমন নোটিশ? অভিভাবককে কেন তিনি নোটিশ করবেন? আমি অভিভাবক হিসেবে যদি মনে করি শিক্ষকগণকে মিষ্টি খাওয়ানো দরকার তাহলে আমি নিজেই মিষ্টিমুখ করাব। মিষ্টির জন্য স্কুল নোটিশ করবে কেন? তারা অভিভাবকদের মিষ্টি নিয়ে যাওয়ার জন্য নোটিশ করতে পারেন কি না? তাও নোটিশের মধ্যে অনুরোধ করেননি তিনি আদেশ করেছেন। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ বিষয়টি নজরে আনার জন্য অনুরোধ করছি।

রবি উদ্দিন নামের একজন লিখেছেন, এই প্রথম দেখলাম স্কুলে মিষ্টি আনার নোটিশ। আরও কত কী দেখতে হবে?

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হওয়া সমালোচনার গুরুত্ব দেয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। সোমবার (১৩ই মে) স্কুলের এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীদের আনা মিষ্টি নিয়ে স্কুলের সকল শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে করা হয়েছে আনন্দ উৎসব।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিস্টার রিক্তা গমেজ আরএনডিএম বলেন, আমাদের স্কুল থেকে ৬৬ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬৩ জন পাস করেছে। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬ জন। আমরা প্রতি বছরই পাস করা শিক্ষার্থীদের নিয়ে পুরো স্কুলে আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। পাস করা শিক্ষার্থীরা তাদের জুনিয়রদের মিষ্টিমুখ করিয়ে যায়। এটা আমাদের স্কুলের ট্রেডিশন। গতকাল সবাই আনন্দ নিয়েই মিষ্টি এনেছে। কেউ তো এই বিষয়ে অভিযোগ করেনি। আমরা স্কুলের সবাইকে নিয়ে একটা আনন্দ উৎসব করেছি। মিষ্টি আনার জন্য কাউকে জোর করা হয়নি।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দীলিপ কুমার বর্ধন বলেন, এভাবে নোটিশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের মিষ্টি নিয়ে আসার নিয়ম নেই। এই বিষয়টা স্কুল কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে দেওয়ায় মানুষ সমালোচনা করছেন। স্কুলে শিক্ষার্থীরা পাস করলে এমনিতেই মিষ্টি নিয়ে যায়। এভাবে ফেসবুকে নোটিশ দিয়ে মিষ্টি নিয়ে আসার নির্দেশনা দেওয়া স্কুল কর্তৃপক্ষের ঠিক হয়নি। আমাদের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও বিষয়টি জানতে পেরে স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টির ব্যাখ্যা চেয়েছে। আমি কিছুক্ষণ আগেও স্কুলের হেড টিচারের সঙ্গে কথা বলেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাকে আজই এই ঘটনার লিখিত ব্যাখ্যা দেবে।

এস/ আই.কে.জে/

এসএসসি শিক্ষার্থী

খবরটি শেয়ার করুন