ছবি : সংগৃহীত
নিজেদের উপার্জিত টাকায় শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। এমনি শুভ উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে যশোর শহরের লালদিঘী পাড়ে অবস্থিত ‘ব্রাদার্স টিটো’স হোম’ নামের একটি বিদ্যালয়ে। ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাদের শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
রোববার (২১শে জানুয়ারি) শহরের লালদিঘীর পাড়ে এসে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন ধরনের শীতের জামা-কাপড় নিয়ে। নিজেদের উপার্জিত টাকায় বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা দরিদ্র মানুষের মাঝে বিতরণ করছে শীতের কাপড়। দিচ্ছে জ্যাকেট, হাত ও পায়ের মোজা এবং কানটুপি।
ব্রাদার্স টিটো’স হোম বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিক সাদাত বলে, আমরা অসহায় রিকশাচালক, পথচারীদের শীতের পোশাক দিচ্ছি। আমাদের অনেক ভালো লাগছে। হালিমা নূর নামে আরেক শিক্ষার্থী বলে, আমরা বৃদ্ধ-বয়স্ক শীতার্তদের শীতের পোশাক দিচ্ছি। তারা আমাদের জন্য অনেক দোয়া করছে।
ব্রাদার্স টিটো’স হোমের পরিচালক আলী আজম টিটো বলেন, আমার স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর যে হস্তশিল্পের কাজ করে এবং শেখে সেগুলো নিয়ে বছর শেষে একটি প্রদর্শনী এবং বিক্রয় অনুষ্ঠান হয়। সেখানে শিশুরা তাদের হস্তশিল্পের পণ্যগুলো বিক্রি করে। এ বছর এই বিক্রয় অনুষ্ঠানে আমরা প্রায় ৩০ হাজার টাকা পাই। সে টাকা দিয়েই এই শীতের পোশাকগুলো কেনা হয়। এ টাকাগুলো এই বাচ্চাদেরই উপার্জন। তাই ওরাই এই শীতের পোশাকগুলো ওদের হাত দিয়ে বিতরণ করেছে।
আরো পড়ুন: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ১৪শ বছরের পুরাতন দুর্গের সন্ধান
শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে কম্বল আর জ্যাকেট দেখতে পেয়ে রিকশা নিয়ে এগিয়ে আসেন রিকশাচালক আফতাব হোসেন। তিনি বলেন, অনেক জায়গায় দেখেছি বড়রা শীতবস্ত্র বিতরণ করে। কিন্তু এবার প্রথম দেখলাম শিশুরা শীতবস্ত্র বিতরণ করছে। আমাকেও একটা দিয়েছে। এটা ওদের ইনকামের টাকায়।
শহরের খয়েরতলা এলাকার রিকশাচালক সাদেক আহমেদ বলেন, ওদের জন্য মন থেকেই দোয়া চলে আসে। এসে বলছে 'আঙ্কেল এটা পরে রিকশা চালাবেন' ভালো একটা জ্যাকেট দিয়েছে। পরে রিকশা চালাতে পারব। শীতে রিকশা চালাতে অনেক কষ্ট হয়।
ওয়াহিদা খাতুন নামে আরেক শিক্ষিকা বলেন, বাচ্চারা তাদের উপার্জিত অর্থের পোশাক তাদের নিজেদের হাতে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করছে এটি একটি দৃষ্টান্ত। আমরা আশা করি এই শিশুরা বড় হয়ে সমাজসেবায় নিজেদের বিলিয়ে দেবে।
এইচআ/ আই.কে.জে