প্রতীকী ছবি
‘সানেক্স’ শাওয়ার জেলের একটি বিজ্ঞাপন সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ব্রিটেনের বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অ্যাডভারটাইজিং স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি’ (এএসএ)। সংস্থাটির মতে—বিজ্ঞাপনটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যে, তা থেকে মনে হতে পারে শ্বেতাঙ্গ ত্বক কৃষ্ণাঙ্গ ত্বকের তুলনায় শ্রেষ্ঠ। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
বিতর্কিত এই বিজ্ঞাপনটি গত জুনে প্রচারিত হয়। এটির প্রথম অংশে দেখা যায়, এক কৃষ্ণাঙ্গ মডেলের ত্বক লালচে, চুলকানিময় ও ফাটা অবস্থায় আছে। এরপরই দেখানো হয় স্নানরত এক শ্বেতাঙ্গ মডেলকে। তার ত্বক মসৃণ ও আর্দ্র ছিল। বিজ্ঞাপনের ভয়েস ওভারে বলা হয়—যারা দিন-রাত চুলকানিতে ভোগেন, এমনকি পানিতেও যাদের ত্বক শুকিয়ে যায়, তাদের জন্য।
এএসএ জানিয়েছে, বিজ্ঞাপনটির বিরুদ্ধে দুটি অভিযোগ আসে। অভিযোগকারীরা বলেন, বিজ্ঞাপনটি কৃষ্ণাঙ্গদের নিয়ে নেতিবাচক ধারণা ছড়ায় এবং ত্বকের রংকে কেন্দ্র করে বিভাজন ঘটায়।
তবে সানেক্স ব্র্যান্ডের মালিক কোম্পানি কলগেট-পামোলিভ দাবি করেছে, বিজ্ঞাপনটি ছিল নিছক একটি নিরপেক্ষ ‘আগে-পরের’ উপস্থাপন, যেখানে কোনো জাতিগত বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল না। সংস্থাটি আরও বলেছে, পণ্যটির কার্যকারিতা বিভিন্ন ধরনের ত্বকে দেখানোই ছিল তাদের লক্ষ্য। বিজ্ঞাপন যাচাইকারী সংস্থা ‘ক্লিয়ারকাস্ট’ও বিজ্ঞাপনটিকে অন্তর্ভুক্তিমূলক হিসেবে বর্ণনা করেছে।
তবে এএসএ মনে করে, বিজ্ঞাপনটিতে কৃষ্ণাঙ্গ মডেলের ত্বককে সমস্যা ও অস্বস্তির প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে, আর শ্বেতাঙ্গ মডেলের ত্বককে সমাধান ও সাফল্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে—যা গুরুতর বর্ণবৈষম্যমূলক ইঙ্গিত বহন করে।
তাই এএসএ নির্দেশ দিয়েছে, এই বিজ্ঞাপন আর সম্প্রচার করা যাবে না। পাশাপাশি ভবিষ্যতে কলগেট-পামোলিভকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যেন তাদের বিজ্ঞাপনে বর্ণবাদের ইঙ্গিত না থাকে এবং সামাজিকভাবে আক্রমণাত্মক না হয়।
উল্লেখ্য, কলগেট-পামোলিভের বিজ্ঞাপন অতীতেও নিষিদ্ধ হয়েছে। ২০১৮ সালে একটি টুথপেস্টের বিজ্ঞাপনে মিথ্যা দাবি করার কারণে বন্ধ করা হয়। আবার ২০১৫ সালে সানেক্সের একটি বিজ্ঞাপনও আর্দ্রতা বজায় রাখার ভুয়া দাবি করায় বাতিল হয়।
এমনকি সাংস্কৃতিক ও বর্ণবৈষম্যমূলক বিতর্কের কারণে সোয়াচ ও ক্র্যাফট হাইঞ্জের মতো অন্য অনেক ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপনও সম্প্রতি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন