প্রতীকী ছবি
এমন একটি দেশের কথা জানেন কি, যেটার এক পাশে ইউরোপ, অন্যপাশ এশিয়া মহাদেশ। পামুকের ইস্তানবুল। এটাই বোধহয় পৃথিবীর একমাত্র শহর যার দু’টো অংশ দু’টো আলাদা মহাদেশে। পশ্চিম ভাগ ইউরোপে, পূর্বভাগ এশিয়ায়। বিখ্যাত ‘সিল্ক রুট’-এর পশ্চিম দ্বার এই শহর।
পুরো মধ্যযুগ জুড়ে প্রাচ্য রোমান সাম্রাজ্য এবং খ্রিষ্ট ধর্মের একটি শাখা ‘ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চ’-এর পীঠস্থান কনস্তান্তিনোপল। ১৪৫৩ সালে রোমানদের হাত থেকে চলে যায় মুসলমান তুর্কি অটোমান সম্রাটদের হাতে। তারপর এর নাম হয় ইস্তানবুল।
ইস্তানবুল এমন একটি শহর যার মধ্যে রয়েছে দু’টো দেশ। একই শহরের একটা অংশ ইউরোপ, অন্য দিকটা এশিয়া। এই শহর মিলনের শহর, সহাবস্থানের শহর, ইউরোপের সঙ্গে এশিয়ার। খ্রিষ্ট ধর্মের সঙ্গে ইসলামের, পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের, ইউরোপীয় ক্লাসিক্যাল ও ইসলামিক স্থাপত্যের।
আরো পড়ুন : দুবাই থেকে উটের দুধ এনে ঢাকায় তৈরি হচ্ছে চা, জানেন দাম কত?
এর এক দিকে সুবিশাল ‘ব্লু মস্ক’ কিংবা ‘নিউ মস্ক’ যা ইস্তানবুলকে এক দর্শনেই চিনিয়ে দেয়। অন্যদিকে পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ চার্চ ‘আয়া সোফিয়া’ যা পরবর্তী কালে মসজিদে পরিণত হলেও মুসলমান শাসকেরা তার খ্রিষ্টীয় স্থাপত্যে কোনো আঘাত কিংবা পরিবর্তন করেননি। মধ্যযুগে তৈরি ‘গ্র্যান্ড বাজার’-এ আজ ভার্সাচি, আর্মেজ, লুই ভিতন-দের ছড়াছড়ি।
ইতিহাস-ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ পৃথিবীর বুকে অনন্য শহর ইস্তানবুল। কত নামেই না একে ডাকা যায়। ইউরোপ-এশিয়ার প্রবেশদ্বার, আন্তঃমহাদেশীয় নগরী, রোমান, বাইজান্টাইন ও অটোমান সাম্রাজের রাজধানী। মসজিদের শহর হিসেবেও পরিচিত এটি।
প্রায় ৭ হাজার বছরের শহর ইস্তানবুল। এখানে রয়েছে মনোরম নীল জলরাশির সমুদ্র সৈকত, প্রণালি, জাদুঘর, রাজপ্রাসাদ ও মসজিদসহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। যা স্থাপত্যের নিদর্শন হয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাই তো প্রতিবছর লাখো পর্যটক এখানে ছুটে আসেন।
ইস্তানবুলের গ্র্যান্ড বাজার ইউরোপের সবচেয়ে বড় বাজার এটি। এখানে এমন কোনো জিনিস বা পণ্য নাই যা পাওয়া যায় না। এছাড়া ইস্তানবুলে রয়েছে দারুণ সব রেস্তোরাঁ। যেখানে সবধরনের খাবার পাওয়া যায়। যেগুলো গুণেমানে অনন্য। অথচ দামে সস্তা। সময় করে ঘুরে আসতে পারেন প্রিয়জনকে নিয়ে। এখানকার ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য যেমন আপনাকে মুগ্ধ করবে তেমনি এখানকার মানুষের আতিথেয়তা ও সংস্কৃতিও মন ভোলাবে নিমিষেই।
এস/ আই.কে.জে/