নেচে-গেয়ে আনন্দ উৎসবে ১২৫তম বর্ষবিদায় ও নতুন বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদযাপন করেছেন খাসিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন। শনিবার (২৩শে নভেম্বর) দিনব্যাপী মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
ঐতিহ্যবাহী এ অনুষ্ঠানকে খাসিয়া ভাষায় ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ (Khasi Seng Kutsnem) বলা হয়। উৎসবে সিলেট অঞ্চলের প্রায় অর্ধশত খাসিয়া পুঞ্জির প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সব পুঞ্জিপ্রধানকে পাগড়ি পরিয়ে সম্মাননা জানানো হয় ও আমন্ত্রিত অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়।
জানা যায়, সেং কুটস্নেম বা বর্ষবিদায় খাসিয়াদের একটি সার্বজনীন উৎসব। প্রাচীন খাসিয়া সমাজে দেবতার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশের মধ্য দিয়ে এ উৎসব পালিত হতো। প্রতিবছরের মতো এবারও কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া পুঞ্জির খেলার মাঠে নানা সমাহারে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। যদিও প্রথমে খাসিদের আয়ের ও জীবিকার প্রধান উৎস পানচাষে চলতি মৌসুমে পানের ব্যবসা মন্দার কারণে ও আর্থিক সংকট থাকায় খাসি সেং কুটস্নেম অনুষ্ঠান হবে না বলে জানিয়েছিল খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল। পরবর্তীতে প্রশাসনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয় এই অনুষ্ঠান।
মাগুরছড়া ফুটবল মাঠের একপ্রান্তে বাঁশের খুঁটির ওপর প্রাকৃতিক পরিবেশে নারকেল গাছের পাতার ছাউনি দিয়ে আলোচনা সভার মঞ্চ তৈরি করা হয়। বৃহত্তর সিলেট আদিবাসী ফোরামের কো-চেয়ারম্যান ও মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি প্রধান সুচিয়াং এর সভাপতিত্বে মঞ্চে অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুস সালাম, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শাওন মজুমদার, কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ডি এম সাদিক আল শাফিন, লাউয়াছড়া খাসিয়া পুঞ্জি প্রধান ও খাসিয়া সোস্যাল কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফিলা পত্মী, ডেবলছড়া পুঞ্জি প্রধান পিডিশন প্রধান, কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) শামীম আখঞ্জিসহ বিভিন্ন পুঞ্জি প্রধানরা।
খাসিয়া সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উপলক্ষে নানান রঙের পোশাক পরে খাসিয়ারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে নাচগান, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মাঠের একপাশে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে মেলা বসে। মাঠের একপাশে সুপারি গাছের পাতা দিয়ে মঞ্চ তৈরি করা হয়।
আরো পড়ুন : কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ৩২৩ কেজি প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারণ
এস/ আই.কে.জে/