সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গবেষণা প্রতিবেদন

শহরে বেড়েছে দারিদ্র্য, কমেছে গ্রামে

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৮:১৯ অপরাহ্ন, ২৭শে মার্চ ২০২৪

#

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)

করোনা মহামারির পর দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার কমে ২০ দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে। তবে পাঁচ বছরের ব্যবধানে গ্রামীণ এলাকায় দরিদ্র কমলেও শহরে বেড়েছে। ২০২৩ সালে দারিদ্র্যের হার দেশের গ্রামীণ এলাকায় ২১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। পাঁচ বছর আগে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য ছিল ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ ও শহরে ছিল ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ।

‘করোনা মহামারি ও পরবর্তী প্রতিবন্ধকতা কীভাবে বাংলাদেশের দারিদ্র্য, আয়বৈষম্য, শিক্ষা এবং খাদ্য সুরক্ষার ওপর প্রভাব ফেলছে’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট যৌথভাবে গবেষণাটি করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সাল শেষে মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ পরিবার তাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়েছে। জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে ২৮ শতাংশ পরিবার ঋণ করেছে। দারিদ্র্য বৃদ্ধি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাবে দেশের সাধারণ মানুষ পুষ্টিকর খাবার কম খাচ্ছে। আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে চিকিৎসা ব্যয় ও ওষুধের দাম ব্যাপক হারে বাড়ায় দেশের স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় বেড়েছে তিন গুণ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শহরের দরিদ্ররা গ্রামের তুলনায় বেশি খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। গ্রামের ২৯ শতাংশ ও শহরের ৩২ শতাংশ দরিদ্র পরিবার মাঝারিভাবে খাদ্যনিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) নির্দেশিকা অনুযায়ী এ খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা পরিমাপ করা হয়েছে।

২০১৮ সালে দেশের সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার ছিল ২১ দশমিক ৬ শতাংশ, যা এখন ২০ দশমিক ৭ শতাংশে নেমেছে। যৌথ গবেষণায় বলা হচ্ছে, বর্তমানে দেশে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে রয়েছে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ। এ হার গ্রামীণ এলাকায় বেশি। গ্রামীণ এলাকায় চরম দারিদ্র্যে রয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ।

আরও পড়ুন: বয়স হলেও ৩৬ শতাংশ পুরুষ এখনও অবিবাহিত

বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ দারিদ্র্যের হার রংপুরে, দ্বিতীয় অবস্থানে বরিশাল। দারিদ্র্যের হার রংপুর ও বরিশালে যথাক্রমে ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ।

উল্লেখযোগ্যভাবে বাংলাদেশে গ্রামীণ দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ২১ দশমিক ৬ শতাংশে কমে এলেও শহুরে দারিদ্র্যের হার ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে গবেষণায়।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সরকার প্রদত্ত সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় এসেছে ৩৭ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী। এর মধ্যে টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড সেবা সর্বোচ্চসংখ্যক তথা ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ পরিবারের কাছে পৌঁছেছে। এ ছাড়া বার্ধক্য ভাতা ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, বিধবা, স্বামী নিগৃহীত, দুস্থ মহিলা ভাতা ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ, আর্থিকভাবে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ভাতা ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছেছে। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই অর্থাৎ ৪৭ শতাংশ সেবা খাতে নিযুক্ত, ৩৬ কৃষি ও ১৮ শতাংশ শিল্প খাতে কর্মরত। জাতীয় পর্যায়ে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। গ্রামীণ এলাকায় এ হার ৩ দশমিক ৬ এবং শহরাঞ্চলে ৪ দশমিক ৬ শতাংশে রয়েছে।

এসকে/ 

দারিদ্র্য গবেষণা প্রতিবেদন

খবরটি শেয়ার করুন