সোমবার, ২০শে অক্টোবর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** পাকিস্তান দেখাল কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ‘ডিল’ করতে হয় *** দেশে লাগাতার অগ্নিকাণ্ডে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে সরকারের কোর কমিটি *** নাহিদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বলল জামায়াত *** প্রথম আলোর আলোচনায় জুলাই সনদ *** আলোচনা-সমালোচনায় কবি-সাংবাদিক আলতাফ, সহকর্মীরা প্রতিবাদমুখর, সরব নারীনেত্রীরা *** জামায়াত সম্পর্কে কী এনসিপির নতুন উপলব্ধি *** খালেদা জিয়ার সংসদ নির্বাচনের প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়ে যা জানাল বিএনপি *** একের পর এক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জরুরি বৈঠক *** জামায়াতসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নতুন কর্মসূচি *** আন্দোলনের জবাবে ট্রাম্প বললেন, ‘আমি রাজা নই’

ভারত-চীন সম্পর্কের ‘ধারাবাহিক অগ্রগতি’ নিয়ে আশাবাদী মোদি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৬:১৭ অপরাহ্ন, ২০শে আগস্ট ২০২৫

#

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠক করেন। ছবি: রয়টার্স

দীর্ঘদিনের উত্তেজনার পর ভারত ও চীনের সম্পর্ক ‘ক্রমাগত উন্নতির দিকে’ থাকায় সাধুবাদ জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। গতকাল মঙ্গলবার (২০শে আগস্ট) চীনের শীর্ষ কূটনীতিক ওয়াং ইর সঙ্গে বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি এমন আশা প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে বদলে যাওয়া বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে এশিয়ার এ দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের সম্পর্ক নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে। খবর আল জাজিরার।

দিল্লিতে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন মোদি। সেখানে ভারত ও চীনের মধ্যকার পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ও সংবেদনশীল বিষয়ে সম্মান প্রদর্শনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। আর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, দুই দেশ এখন ‘স্থিতিশীল উন্নয়নের পথে’ প্রবেশ করেছে এবং তাদের একে অপরের প্রতি ‘বিশ্বাস ও সমর্থন’ থাকা উচিত।

ওয়াং গত সোমবার ভারতে পৌঁছান। তিনি সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গেও বৈঠক করেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ওয়াংয়ের সঙ্গে দোভালের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার ‘উত্তেজনা কমানো, সীমারেখা নির্ধারণ এবং সীমান্ত–সংক্রান্ত বিষয়’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

২০২০ সালে আন্তসীমান্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক ওই সংঘাতে ২০ ভারতীয় সেনা ও চার চীনা সেনা নিহত হন। সংঘাত কেন্দ্র করে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক যোগাযোগ স্থগিত হয়ে যায়। সোমবার ওয়াং বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমরা যে সমস্যাগুলো দেখেছি, তা আমাদের দুই দেশের মানুষের স্বার্থে ছিল না। সীমান্তে যে স্থিতিশীলতা এখন ফিরে এসেছে, তা দেখে আমরা আনন্দিত।’

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন মোদি। সীমান্ত প্রশ্নে ‘ন্যায্য, যুক্তিসংগত ও পারস্পরিক গ্রহণযোগ্য সমাধান’ নিশ্চিত করতে ভারতের প্রতিশ্রুতির কথা আবারও উল্লেখ করেছেন তিনি।

ভারত ও চীনের মধ্যে এমন সময়ে সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে, যখন কিনা নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতীয় পণ্য আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপ করার পর নয়াদিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এ তিক্ততা দেখা দেয়। ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা চালিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে ট্রাম্প এ শুল্ক ঘোষণা করেন।

ভারত দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকার মিত্র হিসেবে বিবেচিত। এশিয়ায় চীনের প্রভাবের বিরুদ্ধে ভারসাম্য রক্ষায় ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে আমেরিকা। ভারত কোয়াড নিরাপত্তা জোটেরও অংশ; যেখানে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানও রয়েছে।

২০২০ সালে লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চীনের সেনাদের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর দুই দেশের সম্পর্ক শীতল হয়ে যায়। দুই পক্ষই সীমান্ত এলাকায় বিপুল সেনা মোতায়েন করে। দুই দেশের বাণিজ্য, কূটনীতি ও উড়োজাহাজ চলাচলের ওপর এর প্রভাব পড়ে।

গত বছর সীমান্তে টহল এবং কিছু সীমান্ত এলাকা থেকে অতিরিক্ত সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। দুই দেশই সড়ক ও রেল নেটওয়ার্ক বানিয়ে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দুই দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ের সফর বেড়েছে। এসব বৈঠকে দুই দেশের বাণিজ্যবিষয়ক কিছু বিধিনিষেধ শিথিল, নাগরিকদের চলাচল ও ব্যবসায়ীদের ভিসা সহজ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গত জুনে বেইজিং ভারতীয় তীর্থযাত্রীদের তিব্বতের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থানগুলো পরিদর্শনের অনুমতি দেয়। দুই দেশ আবারও সরাসরি ফ্লাইট চালুর চেষ্টা করছে।

গত সপ্তাহে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল বলেন, ভারত ও চীন তাদের ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটারের দীর্ঘ সীমান্তে তিনটি পয়েন্ট দিয়ে আবারও বাণিজ্য শুরু করার বিষয়ে আলোচনা করছে। নয়াদিল্লিভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের ফেলো মনোজ যোশী বলেন, দুই দেশের সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে হলে সর্বোচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন।

নরেন্দ্র মোদি ভারত-চীন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন

Footer Up 970x250