ছবি - সংগৃহীত
টেস্ট ক্রিকেটে নতুন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারানোর পর দ্বিতীয় টেস্টে ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে। অবিশ্বাস্য জয়ে পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করলো টিম বাংলাদেশ।
২০০০ সালে টেস্ট ক্রিকেটে পদার্পণ করে বাংলাদেশ। দীর্ঘ ২৪ বছরে এ নিয়ে পঞ্চমবার টেস্টে সিরিজ জয় করলো টাইগাররা। এর আগে দুবার করে সিরিজ হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কিন্তু এবারের জয়টা একদিকে পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল, অন্যদিকে তাদের মাটিতে বলেই এর আলাদা গুরুত্ব। পাকিস্তান একমাত্র ইংল্যান্ড ছাড়া কারো বিরুদ্ধ ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারেনি। এবার সেটাই করে দেখালো বাংলাদেশ। আগে ক্রিকেটের কোনো ফরমেটেই পাকিস্তানের ঘরের মাঠে জয় পায়নি বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটের জয় দিয়ে সে আক্ষেপও পূরণ করলো টাইগাররা।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৬ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। তখন সবাই ধরে নিয়েছিল, বাজেভাবে হারতে বসেছে বাংলাদেশ। সে সময় পাকিস্তানও সিরিজ ড্রয়ের স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশকে টেনে তোলেন লিটন দাস ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনের ১৬১ রানের রেকর্ড জুটি বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত করে। লিটনের ১৩৮ রানের উপর ভর করে ২৬২ রান করে বাংলাদেশ। ১২ রানের লিড পাওয়া পাকিস্তান তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট হলে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৫ রান। যা অনায়াসে মাত্র চার উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যের বন্দরে পৌঁছে যায় টিম বাংলাদেশ। তৈরি হয় নতুন ইতিহাস।
ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল থেকেও সুখবর পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে হারিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় ৪ নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। একসময় টেস্টের পয়েন্ট তালিকায় বাংলাদেশ ৯ কিংবা ১০-এ অবস্থান করতো, সেখানে এক লাফেই ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দল পেছনে ফেলে চার নম্বরে চলে এসেছে।
বাংলাদেশ এখন ৪৫.৮৩ শতাংশ জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে। টেস্টে চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে ৬ ম্যাচে সমান ৩টি করে জয়-পরাজয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ শুরুর আগে ৬ নম্বরে ছিল বাংলাদেশ। ইংল্যান্ড ৪৫.০০ শতাংশ জয়ের হারে ৫ নম্বরে আছে। প্রোটিয়ারা ৩৮.৮৯ শতাংশ জয়ের হারে ছয়ে। বাংলাদেশের ওপরে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড তৃতীয় (৫০.০০ শতাংশ), অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় (৬২.৫০ শতাংশ) ও ভারত প্রথম অবস্থানে (৬৮.৫২ শতাংশ) আছে।
বাংলাদেশ সব সময় ধারাবাহিকভাবে ওয়ানডে ক্রিকেট ভালো খেললেও ক্রিকেটের আদি সংস্করণ টেস্ট ক্রিকেটে বরাবরই বাজে পারফরম্যান্স ছিল। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের অনেক তীর্যক মন্তব্য শুনতে হতো। পাকিস্তানকে ধবলধোলাই নিঃসন্দেহে তাদের বিরুদ্ধে মোক্ষম জবাব। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয় নিশ্চিতভাবেই দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অর্জন।
আই.কে.জে/