বুধবার, ১৬ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩১শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ইন্দোনেশিয়ার, নতুন শুল্ক ১৯ শতাংশ *** পাকিস্তানে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দিলেন ইমরান খানের সাবেক স্ত্রী রেহাম *** বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা চালু করেছে মালয়েশিয়া *** আজ রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে *** সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটা ভাঙা নিয়ে ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চাইলেন মমতা *** এত শিক্ষার্থীর জীবন হুমকিতে ফেললেন, সন্তানদের মুখ মনে পড়ল না—বাশারকে আদালত *** শিঙাড়া-জিলাপির জন্য সিগারেটের মতো সতর্কবার্তা দেখাবে ভারত *** নিজেকে মোটা ভাবা এক ধরনের মানসিক রোগ! *** তারেক-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি বৃহস্পতিবার *** নিবন্ধন যাচাইয়ে এনসিপিসহ ১৪৪ দলই ফেল, সুযোগ পাচ্ছে সবাই

নিজেকে মোটা ভাবা এক ধরনের মানসিক রোগ!

স্বাস্থ্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৭:২৮ অপরাহ্ন, ১৫ই জুলাই ২০২৫

#

বাস্তবে পাতলা হয়েও নিজেকে মোটা ভাবা একটি মানসিক রোগ। এর নাম অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা। ছবি: ফ্রিপিক

বেশি ওজন, শরীরচর্চার অভাব আর অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে অনেকে স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন এখন। ফলে অনেক তরুণ-তরুণী ওজন কমাতে গিয়ে অনলাইনে দেখা ‘ফ্যাড ডায়েট’ বা চটজলদি ওজন কমানোর ডায়েট অনুসরণ করছেন। এসব ডায়েট হয়তো প্রথমে নিজেদের আকর্ষণীয় মনে হবে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সেগুলো বিপজ্জনক হতে পারে। কেরালার মর্মান্তিক এক ঘটনা এর প্রমাণ।

কেরালার মেরুভাম্বাই এলাকার ১৮ বছর বয়সী শ্রী নন্দা নামের এক তরুণী ইন্টারনেটে দেখা ‘ওয়াটার ফাস্টিং’ ডায়েট মেনে চলছিলেন। ছয় মাস ধরে তিনি প্রায় কিছুই খাননি। কেবল গরম পানি পান করে চলছিলেন। কিছুদিন আগে তার অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শরীরে চিনির মাত্রা, রক্তচাপ ও লবণ সব ছিল অত্যন্ত কম। অবশেষে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখা হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি। তথ্যসূত্র হেলথশটের।

চিকিৎসকেরা নিশ্চিত করেছেন, শ্রী নন্দা অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা নামের এক গুরুতর মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। যা এমন একটি মানসিক রোগ, যেখানে একজন মানুষ সব সময় মনে করেন তিনি মোটা। যদিও বাস্তবে হয়তো তিনি খুবই পাতলা। এ ভয়ে তিনি খাওয়া-দাওয়া একেবারে কমিয়ে দেন বা বাদই দিয়ে দেন।

অনেকে আবার ওজন কমাতে অতিরিক্ত ব্যায়াম, উপবাস বা খাবার খেয়ে পরে তা বমি করে বের করে দেওয়ার মতো কাজও করে থাকেন। এই অভ্যাস দীর্ঘদিন চললে শরীরে পুষ্টির মারাত্মক ঘাটতি হয় এবং একসময় তা প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে।

অ্যানোরেক্সিয়ার কিছু সাধারণ উপসর্গ হলো- অতিরিক্ত ওজন কমে যাওয়া বা একেবারে পাতলা হয়ে যাওয়া, সারাদিন দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, চুল পড়ে যাওয়া বা পাতলা হয়ে যাওয়া, গায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, সব সময় ঠাণ্ডা লাগা, মেয়েদের ক্ষেত্রে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া, আয়নার সামনে নিজেকে মোটা মনে হওয়া, সব সময় খাবার, ক্যালরি, ওজন এসব নিয়ে ভাবা এবং মন খারাপ, দুশ্চিন্তা করা বা রেগে যাওয়া।

অনেকের মধ্যে এমন মানসিক অবস্থা দেখা যায়। তাদের মধ্যে অতিরিক্ত পারফেকশনিস্ট হওয়া, উদ্বেগে ভোগা, সবকিছু কড়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এসব তাদের অ্যানোরেক্সিয়ার দিকে ঠেলে দেয়।

শৈশবে বা কৈশোরে যদি কেউ নির্যাতনের শিকার হয় বা বড় ধরনের মানসিক ধাক্কা খায়, তবে অনেক সময় তারা খাওয়া কমিয়ে শরীরের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করে। এটা ভুলভাবে মানসিক কষ্ট সামলানোর উপায় হয়ে দাঁড়ায়। কিশোর-কিশোরীরা নিজের শরীর নিয়ে সব সময় সচেতন থাকে। অনেকে চায় ‘স্লিম’ হতে, যেন বন্ধুদের মতো লাগে বা সোশ্যাল মিডিয়াতে ভালো দেখায়। এই চাপ থেকেই অনেক সময় তারা ডায়েট চার্ট অনুসরণ শুরু করে।

ডায়েটিশিয়ানদের মতে, এই সমস্যা প্রতিরোধে কিছু বিষয় বিবেচনায় থাকা জরুরি। তরুণদের শেখাতে হবে যে, সৌন্দর্য মানেই পাতলা হওয়া নয়। শরীর যেমনই হোক, সেটাকে সম্মান করতে হবে। নিজের বা অন্যের শরীর নিয়ে নেতিবাচক কথা না বলাই ভালো। প্রতিদিন সঠিক সময় খাওয়া এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।

জে.এস/

অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন