ছবি: সংগৃহীত
একাত্তরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর গণহত্যার অভিযোগে দেশটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়াসহ অমীমাংসিত তিনটি বিষয়ের সুরাহা চেয়েছে ঢাকা। দুই দেশের সম্পর্কের মজবুত ভিত্তির স্বার্থে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর সুরাহা হওয়া জরুরি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ই এপ্রিল) ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ এ বিষয়ে জোর দিয়েছে। আর পাকিস্তান এ বিষয়গুলো সুরাহার জন্য আলোচনার সদিচ্ছা ব্যক্ত করেছে।
পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানান। পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে তিনি সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।
সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের ষষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মো. জসীম উদ্দিন বাংলাদেশের এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ তার দেশের নেতৃত্ব দেন। প্রায় ১৫ বছরের বিরতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নিতে আমনা বালুচ গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকায় আসেন।
পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর আমনা বালুচ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পররাষ্ট্রসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলো উত্থাপন করেছি। এ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে: ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়া, আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন এবং অবিভাজিত সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রদান ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রেরিত বিদেশি সাহায্যের অর্থ হস্তান্তর।’
পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে বিদ্যমান ঐতিহাসিকভাবে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তির মাধ্যমে একটি মজবুত, কল্যাণমুখী ও ভবিষ্যৎমুখী সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য পাকিস্তানের সহযোগিতা কামনা করি এবং এ লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করি।’
ঐতিহাসিক অমীমাংসিত বিষয় সুরাহায় পাকিস্তানের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে জসীম উদ্দিন বলেন, পাকিস্তান এ বিষয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। আজকের যে বৈঠক, এটা নিয়মিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ বৈঠক সর্বশেষ হয়েছিল ২০১০ সালে। কাজেই দেড় দশক পর প্রথম যে বৈঠক হলো তাতে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছেন না। তাদের দিক থেকে এ বিষয়ে আলোচনার সদিচ্ছা তারা ব্যক্ত করেছেন।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন