সোমবার, ৮ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৩শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবাক করা মাটি, আগুনে জ্বলে পানিতেও ভাসে!

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:০৩ অপরাহ্ন, ১৭ই অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

আশ্চর্যজনক হলেও সত্য। নীলফামারীর ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে কঞ্চনা বিলের মাটি যেন অলৌকিক হয়ে দেখা দিয়েছে। যে মাটি আগুনে দিলেও জ্বলছে পানিতেও ভেসে থাকে। আবার কেউ কেউ মশা তাড়ানোর কাজসহ জমিতে সার হিসেবেও ব্যবহার করছেন বলে জানা গেছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, বিলটিতে বৃষ্টি হলে বিলের মাটি ভেসে ওপরে উঠে আসে। শুষ্ক মৌসুমে আবার নিচে দেবে যায়। আবার মাছ চাষের জায়গা বের করতে প্রতি বছর এলাকাবাসী এ মাটি সরিয়ে বিলটি খনন করেন।

মাটি কাটার সময় ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারি স্থানীয়রা পেয়েছিল কষ্টিপাথরের একটি বৌদ্ধমূর্তি এবং বেশ কিছু মাটির হাঁড়ি। কষ্টিপাথরের মূর্তির মুণ্ডটি লম্বায় সাড়ে ছয় ইঞ্চি এবং প্রস্থ ছিল আড়াই ইঞ্চি। এর ওজন ৭৫০ গ্রাম। পরে সেখানে প্রাচীন আমলের কয়েকটি ইটও পাওয়া যায়।

এদিকে এ বিলের ভেতরে থাকা চোরাবালিকে স্থানীয়রা  ‘ভুল’ বলে ডাকে। কেউ সেই চোরাবালিতে ‘ভুলে’ পড়লেই বেঁচে ফেরা মুশকিল।

ওই এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিলের মাটি বস্তায় করে বাড়িতে এনে রাখেন। ওগুলো দিয়ে চুলা জ্বালান তারা। 

একই এলাকার জমির বলেন, বর্ষাকালে বিলের নিচ থেকে এ মাটি পানিতে ভেসে ওঠে। মাছ চাষের সুবিধার্থে তখন এলাকাবাসী ওই মাটি সরিয়ে নেয়। একসময় এখানে প্রচুর পরিমাণে খিলকদমের গাছ ছিল, বন্যপ্রাণী বাস করত, পাখি আসত, প্রচুর পরিমাণে মাছ পাওয়া যেত। এখন আর সে সব নাই।

এদিকে সরকারি ভূমি রেকর্ডে দেখা যাচ্ছে, জমি সংকোচনের পরও ১৯৯০ সালের আগপর্যন্ত এখানে ৮৪ বিঘা জলাভূমি ছিল। ১৯৯০ সালে উঁচু জমি স্থানীয়দের লিজ দেওয়ার পর এর আয়তন দাঁড়ায় ৬৯ বিঘায়। এ ছাড়া লিজ নেয়া অংশে মাটি ফেলে কৃষি জমিতে রূপান্তর করে এ মাটির বৈশিষ্ট্য নষ্ট করা হচ্ছে।

এদিকে সম্প্রতি কঞ্চনা বিল পরিদর্শনে যান নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ। সব দেখে তিনি বলেন, এটা অফিসিয়িলি একটা বিল। শুকনো মৌসুমে এর একটা অংশ চাষাবাদের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। বিল হওয়ার কারণে এ মাটিটা অর্গানিক মিটারে খুব সমৃদ্ধ মনে হচ্ছে। যা কোনো মৃত্তিকা বিশেষজ্ঞ ভালো বলতে পারবেন।

প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এ মাটিটা অত্যন্ত উর্বর। এটি ফসলের জন্য যথেষ্ট সহায়ক হওয়ার কথা। আমার অচিরেই একজন মৃত্তিকা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেব। যাতে করে এ মাটিটা এর চেয়ে ভালো কোনো কাজে ব্যবহার করতে পারি।

ওআ/

পানি আগুন মাটি

খবরটি শেয়ার করুন