শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এলজিবিটি সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে চীন সরকার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, ৩০শে জুন ২০২৩

#

২০২১ সাল থেকেই চীনে এলজিবিটি ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।

সাংহাইপ্রাইড নামের আয়োজক গোষ্ঠী এ স্থগিতাদেশের কোনো পর্যাপ্ত কারণ দেখাতে পারেনি।

মূলত রাজনৈতিক বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় চীনে। তাই সাংহাইপ্রাউড এলজিবিটি সম্প্রদায়ের জন্য ব্যতিক্রমধর্মী নাচ, দৌড় কিংবা চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করতো।

তবে বর্তমানে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের জন্য তেমন আয়োজনের ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।

শুধু সাংহাইপ্রাইডই যে এ আয়োজন বন্ধ করেছে তেমনটা নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আরো অনেক সংগঠনকে এ আয়োজন বন্ধ করতে হয়েছে।

জনপ্রিয় চীনা মেসেজিং অ্যাপ উইচ্যাট থেকে বেশ কিছু এলজিবিটি একাউন্ট ২০২১ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

একইবছর, এলজিবিটি সম্প্রদায়ের হয়ে আইনগত সাহায্য প্রদানকারী একটি দলের কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। জানা যায়, এ দলের সদস্যদের আটক করে রাখা হয়েছিল এবং তাদের কার্যক্রম বন্ধের শর্তেই ছেড়ে দেওয়া হয়। 

সর্বশেষ গত মাসে বেইজিং এলজিবিটি সেন্টারও তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। 

সাংহাই প্রাইড এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রেমন্ড ফাং জানান, গত মাসে বেইজিং এর এলজিবিটি সেন্টার বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে চীনের সর্বশেষ সেন্টারটি ও বন্ধ হয়ে যায়।

ফাং জানান, সাংহাইপ্রাইডের উদ্যোক্তা এবং আইনজীবীদের উপর চীন সরকার বেশ চাপ প্রয়োগ করে। এ অবস্থায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠে। 

১২ বছর ধরে কার্যক্রম চালানোর পর তারা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। ফাং বর্তমানে চীনের বাইরে অবস্থান করছেন। 

এলজিবিটি সংস্থার অপর একজন জানান, চীনা কর্তৃপক্ষ তাদেরকে আটক করে তাদের উপর মানসিক চাপ প্রয়োগ করছিল। 

২০১৯ সালে, চীনে প্রায় ৭৫০ লাখ লোক এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ছিল। অর্থাৎ মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫% এ সম্প্রদায়ের ছিল। 

এলজিবিটি গোষ্ঠী সমকামি বিবাহসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে প্রচারণা চালিয়েছে, যা চীনে স্বীকৃত নয়। 

১৯৯৭ সালে চীনে সমকামিতাকে অপরাধমূলক ঘোষণা করা হয় এবং চাইনিজ সোসাইটি অফ সাইকিয়াট্রি ২০০১ সালে এটিকে মানসিক ব্যাধি হিসেবে অভিহিত করে। 

২০১৯ সালে, চীনের শীর্ষ আইন প্রণয়নকারী সংস্থা, ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস স্বীকার করে, সমকামি বিবাহের বৈধতা নাগরিকদের শীর্ষ আবেদনের মধ্যে একটি। 

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নাগরিক অধিকার আন্দোলন এবং অনলাইন মতবিরোধের জেরে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের ক্ষমতা কিছুটা কমে আসে। 

প্রাক্তন পুলিশ অফিসার মা বাওলি এলজিবিটি সম্প্রদায়ের জন্য ডেটিং অ্যাপ চালু করেন। 

মা এর কোম্পানি ২০২০ সালে ব্লুসিটি নামে এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চালু করে। এটি বিশ্বের প্রথম এলজিবিটি সম্প্রদায়ের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। 

তবে গত আগস্ট মাসে ব্লুসিটিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়। মা ও এর চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী পদ থেকে সরে দাঁড়ান। 

লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের সহযোগী অধ্যাপক টিমোথি হিলডেব্র্যান্ড বলেন, যেসব দেশে সামাজিক এবং পারিবারিক বৈষম্য বেশি সেখানেই এই সমস্যাগুলো আরও বেড়ে যায়৷

চীনের বাইরে থাকা ফাং বিদেশ থেকে দেশের এলজিবিটি সম্প্রদায়কে সমর্থন করে চলেছেন।


Important Urgent

খবরটি শেয়ার করুন