শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কোভিড-১৯ মহামারী কাটিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে সিঙ্গাপুর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৫২ অপরাহ্ন, ৮ই জুলাই ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে এখনও অনেক জায়গায় কোভিড-১৯ মহামারীর প্রকোপ থাকলেও এ নিয়ে উদ্বেগ আগের তুলনায় অনেক কম।

মূলত এই কোভিড থেকে উত্তরণের পদ্ধতি প্রত্যেক দেশের জন্যেই ভিন্ন। কোন দেশ কত দ্রুত এ মহামারী থেকে উত্তরণ করতে পেরেছে তা মূলত নির্ভর করেছে তাদের জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের প্রতিক্রিয়ার উপর। যারা এ ব্যাপারে যথাসময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন তারা অন্যদের তুলনায় দ্রুত এ সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছেন। 

সম্প্রতি, দ্য ইকোনমিস্ট একটি সূচক প্রকাশ করেছে যেখানে বর্তমান অশান্ত ভূ-রাজনৈতিক যুগে বিকাশমান শহরগুলোকে দেখাতে গত তিন বছরের অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতার উপর ভিত্তি করে শহরগুলোকে স্থান দিয়েছে৷ এখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি এর পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সিঙ্গাপুর। সিঙ্গাপুরের অবস্থান দুবাইয়েরও আগে।

জনসংখ্যা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অফিসের শূন্যপদ এবং আবাসন মূল্যকে মানদণ্ড হিসেবে ধরে, গত তিন বছরে বৈশ্বিক মহামারী ও অস্থিতিশীল ভূরাজনৈতিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে দশটি শহরের তালিকা তৈরি করা হয়।

তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে নিউইয়র্ক। পরবর্তী শহরগুলো হলো লন্ডন, টোকিও, সিডনি, জোহানেসবার্গ, প্যারিস এবং সান ফ্রান্সিসকো অনুসরণ করেছে।

দ্য ইকোনমিস্ট-এর তথ্যের ভিত্তিতে, ২০১৯ থেকে ২০২২ এর মধ্যে, মিয়ামির জনসংখ্যা ১.৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, প্রকৃত জিডিপি ১০.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, অফিস শূন্যতার হার কিছুটা বেড়ে হয়েছে ২.৩ শতাংশ, এবং আবাসনের দাম বিস্ময়করভাবে ৩৯.৫ শতাংশ বেড়েছে।

সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে এর জনসংখ্যা কমেছে ১.২ শতাংশ, প্রকৃত জিডিপি বেড়েছে ৬.৯ শতাংশ, অফিস শূন্যতার হার সামান্য বেড়ে হয়েছে ১.৪ শতাংশ এবং আবাসনের দাম ১০.৯ শতাংশ বেড়েছে।

দুবাই এর জনসংখ্যা ৫.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু প্রকৃত জিডিপি ১.৯ শতাংশ কমেছে, অফিস শূন্য পদ তিন শতাংশ কমেছে এবং আবাসনের দাম ১১.৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অন্যদিকে সিঙ্গাপুরের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হংকং এর অবস্থা অনেক খারাপ। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০২২ সালের মধ্যে হংকং এর জিডিপি প্রায় এক শতাংশ কমে ৩৫৯৮ কোটি মার্কিন ডলার হয়েছে। এর জনসংখ্যা ৭৫ লাখ থেকে প্রায় ২.৩ শতাংশ কমে ৭৩.৩ লাখ হয়েছে। অনেক নাগরিক চীনের কঠোর বিধিনিষেধের জন্য চীন ছেড়ে দুবাই এবং সিঙ্গাপুরে চলে গিয়েছে।

কম জনসংখ্যার ফলে হংকং এ অফিসের শূন্যপদ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আবাসিক সম্পত্তির দাম কমে গিয়েছে।

সিঙ্গাপুরের কোভিড লকডাউন দুবাই এবং বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশগুলোর তুলনায় কঠোর হলেও হংকং এর চেয়ে ভালো পরিস্থিতিতে ছিল।

কোভিড-১৯ মহামারীতে সিঙ্গাপুরের প্রতিক্রিয়া ব্যাপকভাবে কার্যকর বলে বিবেচিত হয়। কোভিডের আগে, সিঙ্গাপুরে একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ছিল। যখন মহামারী আঘাত হানে, তখন প্রথম থেকেই ভাইরাসটিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। ভাইরাস বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশটি অতিদ্রুত সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসে।

আরো পড়ুন: চীন ভ্রমণে নাগরিকদের সতর্ক করলো যুক্তরাষ্ট্র

সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও ভ্যাকসিনের দিকটি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে এবং বিপুল পরিমাণ এমআরএনএ ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করে।

দেশের কোম্পানিগুলোকে প্রশিক্ষণের জন্য অনুদান প্রদান করে সরকার এবং তাদের কর্মচারীদের ধরে রাখার জন্য উৎসাহও প্রদান করা হয়। তাই তাদের কর্মীদের ছাঁটাই করতেই হয়নি।

এম এইচ ডি/

ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ করোনা মহামারী সিঙ্গাপুর জনসংখ্যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি

খবরটি শেয়ার করুন