চীনের উৎপাদনশীলতা কমাতে বৈদেশিক নীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসাথে চীনের উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমাতেও বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করছে দেশটি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি)কে প্রত্যাখ্যান করেছেন, যার মাধ্যমে ১২টি প্যাসিফিক অঞ্চল অর্থনৈতিকভাবে একটি চুক্তিতে একত্রিত হবে বা কূটনীতির হাতিয়ার হিসেবে আমেরিকার বাজারে প্রবেশাধিকার পাবে।
এর কারণ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি, ক্যাথারিন তাই বলেন, এ চুক্তি চীনের প্রতি নির্ভরশীলতা কমানোর বদলে বরং বাড়াবে। এই চুক্তি শুধুমাত্র তাদের জন্যেই লাভজনক হবে যারা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে অনৈতিক পথ অবলম্বন করেছেন।
তবে প্রশ্ন থেকে যায় চীন কীভাবে সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও মুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা লাভ করে? তার উত্তর হলো সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও চীন পণ্য উৎপাদনশীলতার ক্ষেত্রে শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে।
মূলত এ কারণেই প্রাক্তন ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি পুনর্বিবেচনা করেছিল। কারণ এ চুক্তির ফলে উত্তর আমেরিকার পরিবর্তে সবচেয়ে বেশি লাভের মুখ দেখছিলো চীন। ঠিক একই কারণে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প টিপিপি প্রত্যাখ্যান করেন।
তবে এশিয়ার অনেক দেশই টিপিপি তে বাইডেনের অংশগ্রহণ চায় এবং চায় তিনি তার ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক কে একটি মুক্তবাণিজ্যে পরিণত করবেন যাতে করে ব্যবসা করা আরো সহজতর হয়ে যায়। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য করার তাদের অন্যতম লক্ষ্য হলো সরবরাহ চেইনগুলোকে উন্নত করা, যা ইতিমধ্যেই চীনের সাথে সংযুক্ত। ফলে চীনের প্রতি নির্ভরশীলতা কমার বদলে বরং বাড়বেই।
তাই তার বক্তব্যে ইচ্ছা করেই চীনের বিরুদ্ধে কথা বলা এড়িয়ে যান। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা চীনের বিরুদ্ধে কোন কথা সরাসরি বলা প্রায়শই এড়িয়ে যান।
বাইডেনের মতো তাইও মনে করেন, মুক্ত বাণিজ্য কর্মী, পরিবেশ এবং জাতীয় সুরক্ষার কথা না ভেবে ভোক্তাদের গুরুত্ব প্রদান করে। এর পরিবর্তে তারা শিল্পনীতি এবং আমেরিকান প্রণোদনাগুলোকে গুরুত্ব প্রদান করছে। একে বাইডেনোমিক্স বলে অভিহিত করা হয়।
বাইডেন চীনের বিপরীতে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে তার সরকারের সমস্ত দুর্বলতা মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন।
সম্প্রতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান। এ সময় উভয় দেশই ভারতীয় বিমানবাহিনীর জন্য জেট ইঞ্জিনের সহ-উৎপাদন, প্রতিরক্ষা শিল্পখাত, মহাকাশ খাতে সহযোগিতা, সেমিকন্ডাক্টর সাপ্লাই চেইন, প্রযুক্তি উদ্ভাবনী অংশীদারিত্ব এবং উদীয়মান কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
আই. কে. জে/