নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস - ছবি: সংগৃহীত
নিজ নামে প্রতিষ্ঠিত তিনটি ট্রাস্টে দান করা অর্থের বিপরীতে তিন করবর্ষে আয়কর কর্তৃপক্ষের ‘দানকর’ আরোপ বৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা পৃথক তিনটি লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ রোববার (২৩ জুলাই) এই সিদ্ধান্ত দেন।
রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, লিভ টু আপিল খারিজ হওয়ায় দানকর আরোপ বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রইল। দাবি করা ১৫ কোটির বেশি টাকার মধ্যে আপিল দায়েরের শর্তানুযায়ী ড. ইউনূস ইতিমধ্যে তিন কোটি টাকা দিয়েছেন। বাকি প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা এখন তাঁকে দিতে হবে।
ট্রাস্ট তিনটি হলো—প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ট্রাস্ট, ইউনূস ফ্যামিলি ট্রাস্ট ও ইউনূস সেন্টার ট্রাস্ট। এই তিন ট্রাস্টে ড. ইউনূস দান করেন। তিন ট্রাস্টে দান করা অর্থের বিপরীতে আয়কর কর্তৃপক্ষের ‘দানকর’ আরোপ করে। এর বিরুদ্ধে ড. ইউনূসের করা পৃথক তিনটি আবেদন খারিজ করে গত ৩১ মে রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে তিনটি ট্রাস্টে তিন করবর্ষে ড. ইউনূসের দেওয়া উপহারের (দান) বিপরীতে কর আরোপকে বৈধ বলা হয়।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে গত ২০ জুন আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৃথক তিনটি লিভ টু আপিল করেন ড. ইউনূস। এর সঙ্গে হাইকোর্টের রায় স্থগিত এবং আয়কর কর্তৃপক্ষের দেওয়া এ-সংক্রান্ত চাহিদাপত্রের কার্যক্রম স্থগিতের আরজিও ছিল।
তিনটি লিভ টু আপিল আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হয়ে আজ আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।
আজ আদালতে লিভ টু আপিলকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সুমাইয়া ইফরিত বিনতে আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আইনজীবীদের তথ্যমতে, তিন ট্রাস্টে ড. ইউনূসের দান করা অর্থের পরিমাণ ৭৬ কোটি ৭৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। দানের বিপরীতে ২০১১-১২,২০১২-১৩ ও ২০১৩-১৪ করবর্ষের জন্য ‘দানকর’ হিসেবে ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা আরোপ করে আয়কর কর্তৃপক্ষ। দাবি করা ১৫ কোটির বেশি টাকার মধ্যে আপিল দায়েরের শর্তানুযায়ী ড. ইউনূস ইতিমধ্যে তিন কোটি টাকা দিয়েছেন।
আরো পড়ুন:এ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৮৮ হাজার ৪১৮ হাজি
ড. ইউনুসের আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘তিনটি লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ফলে হাইকোর্টের রায় বহাল রয়েছে।’
আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আইনজীবী সরদার জিন্নাত আলী বলেন, ‘মক্কেলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এম/