ছবি: সংগৃহীত
ধান ও ডাল চাষের জন্য বিখ্যাত পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলের কৃষকরা এখন ফল চাষেও সমৃদ্ধি অর্জন করছেন। প্রতি বছর এ জেলায় উন্নত জাতের আম চাষের পরিধি বাড়ছে।
এ বছরও জেলায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে আমের বাগান হয়েছে। যথাযথ পরিচর্যা ও আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। স্থানীয় বাজারে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে এসব আম।
পটুয়াখালীর কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে ফল চাষে আগ্রহী ছিলেন না। তাই জ্যেষ্ঠ-আষাঢ় মাসে অন্য জেলার ফল দিয়েই এখানকার চাহিদা পূরণ হতো। কিন্তু সেসব দিন এখন অতীত। মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্থানীয় আম চাষিরা এখন বাজার দখল করতে শুরু করেছেন।
পটুয়াখালীতে আমের সফল আম চাষি সরোয়ার কাজী। দশমিনা উপজেলার বাশবাড়িয়া ইউনিয়নে নিজের বসতবাড়ির পাশে ৫০ শতক জমিতে তৈরি করেছেন আমের বাগান। দুবছর আগে এখানেই তিনি বিভিন্ন জেলা থেকে দেশি-বিদেশি প্রায় ২৫ প্রজাতির আমের চারা রোপণ করেন। এ বছর তিনি বাগান থেকে পাঁচ লাখ টাকার আম বিক্রির প্রত্যাশা করছেন।
সরোয়ার কাজী বলেন, আমি দেখলাম রাজশাহীসহ উত্তর অঞ্চল থেকে আমাদের এ এলাকায় আম আসে। অনেক সময় দেখা যায় আমে ফরমালিনসহ কীটনাশক দেওয়া থাকে। আম খেয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই চিন্তা করলাম নিজেই আমের বাগান করবো, নিরাপদ ফল উৎপাদন করবো এবং সহনীয় দামে বিক্রি করবো। সেই পরিকল্পনা নিয়ে বাড়ির পেছনের যায়গায় ৬০ হাজার টাকার মাটি কাটিয়ে আম গাছের চারা রোপণ করি।
সরোয়ার আরও বলেন, কাটিমন, কিউজাই, হিমসাগর, বারি-৪, ব্যনানা ম্যাঙ্গো, আম্রপালি থেকে শুরু করে ২৫ প্রজাতির আমের চারা লাগিয়েছি। সব গাছেই এবার ভালো ফলন হয়েছে। তবে তীব্র গরম ও খরার কারণে কিছু আমের মুকুল ঝড়ে গেছে। এরপরও গত বছর এক লাখ টাকার মতো আম বিক্রি করলেও এবার অন্তত পাঁচ লাখ টাকা হবে আশা করছি। এছাড়া আমি এলাকার মানুষকেও আম খাওয়াচ্ছি। এ বছর থেকে আমের ভালো মানের কলমও বিক্রি করা শুরু করবো।
এদিকে সরোয়ার কাজীর এ আমের বাগান দেখতে প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভিড় করছেন। ক্ষতিকর কীটনাশক ও ফরমালিন মুক্ত হওয়ায় বাগান থেকেই সরাসরি পেড়ে কিনে নিচ্ছেন সবাই।
আরো পড়ুন: কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে চা চাষে সফলতা
পটুয়াখালী পৌর শহর থেকে আম বাগান দেখতে এসেছেন জলিলুর রহমান সোহেল। তিনি বলেন, পটুয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলে বাণিজ্যিক আমের খুব বেশি চাষাবাদ দেখা যায়না। এ বাগানের কথা শুনে আজ দেখতে এলাম। ভালোই লাগলো সরোয়ার কাজীর কাছ থেকে পরামর্শ নিলাম। দেখি আমাদের এলাকায় এমন একটি বাগান করতে পারি কি-না।
পটুয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, পটুয়াখালী জেলায় প্রতিবছর ফল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ায় আবাদি জমির পরিমাণও বাড়ছে। জেলায় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক ফল চাষ হচ্ছে। যার মধ্যে আমের চাষ সব থেকে বেশি। কৃষি বিভাগ চাষিদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছে।
এসি/আইকেজে
খবরটি শেয়ার করুন