ছবি-সংগৃহীত
বর্তমান সময়ে পরিবেশবিদরা পৃথিবীর স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে যেসব বিষয়ে জোর দিতে বলেছেন, তার মধ্যে অন্যতম ছাদকৃষি। দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা আবশ্যক। সেই তুলনায় আমাদের দেশে বনভূমির পরিমাণ অনেক কম।
শুধু যে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ছাদকৃষি আবশ্যক, তা কিন্তু নয়। সৌন্দর্য বর্ধন কিংবা বাড়তি আয়ের উৎস এই ছাদকৃষি। এছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অনেকে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে নানাবিধ সবজির চাষ করছেন। লাউ, শিম, টমেটো ইত্যাদি শীতকালীন সবজি শোভা পাচ্ছে সেসব ছাদ বাগানে।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের (এআইএস) তথ্যমতে, খাদ্যবিজ্ঞানীরা একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য প্রতিদিন ৪০০ গ্রাম ফল-সবজি খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন। এর মধ্যে শাকপাতা ১১০ গ্রাম, ফুল-ফল-ডাঁটা জাতীয় সবজি ৮৫ গ্রাম, মূল জাতীয় ৮৫ গ্রাম ও ফল ১১০ গ্রাম।
তবে এই পরিমাণে শাক-সবজি অনেকেই গ্রহণ করছেন না। বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্মের খাদ্যতালিকায় সুষম খাদ্যের উপস্থিতি অত্যন্ত কম। শুধু যে অর্থের অভাবে খাদ্যতালিকায় সবজির উপস্থিতি সামান্য; এমনটি নয়। নিরাপদ ও সতেজ সবজির অভাবেও অনেকে শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে পারছেন না।
তাই টাটকা শাক-সবজি পেতে অনেকেই বাড়ির আঙিনায় গড়ে তুলছেন শাক-সবজির বাগান। গ্রামাঞ্চলে বাড়ির আঙিনায় করা সম্ভব হলেও শহরাঞ্চলে বাধে বিপত্তি। তাই বিকল্প হিসেবে অনেকে নিজের বাসার ছাদে গড়ে তুলছেন শখের বাগান। তুলনামূলক সহজ হওয়ায় লাগাচ্ছেন শীতকালীন সবজির চারা।
আরো পড়ুন: ৬ কোটি টাকার ফুল বেচাকেনার আশায় যশোরের চাষিরা
এতে হাতের কাছে শাক-সবজি থাকলে সবাই তা খেতে আগ্রহী হবেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর সেটি যদি হয় টাটকা, তাহলে কোনো কথাই নেই। তবে ছাদবাগান করার আগে অনেকেই ছাদের প্লাস্টারের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। সে ক্ষেত্রে বড় আকারের টবের ভেতর শাক-সবজি ফলানো অনেক নিরাপদ।
শীতকালীন সবজি টমেটো, বেগুন, মরিচ, লেটুসপাতা, লাউ শাক, শিম গাছ ইত্যাদি ফসল সহজেই টবের ভেতর করা সম্ভব। নিজহাতে গড়া সবজির বাগানে যত্নেও কোনো ত্রুটি রাখা হয় না। স্বাস্থ্য সচেতনতায় রাসায়নিকের বদলে প্রাকৃতিক জৈব সারকেই বেছে নেন সবাই।
এতে বনভূমির পরিমাণ যেমন বাড়ে; তেমনই বৈশ্বিক উষ্ণতাও কমে আসে। শহরের বাড়ির পরিবেশ হয়ে ওঠে শীতল। পাশাপাশি বাড়তি আয়ের সঙ্গে উৎপাদিত পুষ্টিকর সবজি খেতেও অন্যরকম অনুভূতি জেগে ওঠে। তাই শীতে ভবনের ছাড়ে গড়ে তুলুন শাক-সবজির বাগান।
এসি/ আই. কে. জে/