পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ছবিঃ সংগৃহীত
সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং একাত্তরের পরাজিত শক্তি যাতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) অবহিত করেছি। একইসঙ্গে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বানও জানিয়েছি।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সম্প্রীতি বাংলাদেশের মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় সম্প্রীতি বাংলাদেশের নেতারা চারটি দাবি উপস্থাপন করেন। লিখিত দাবিগুলো মধ্যে রয়েছে– ধর্মভিত্তিক প্রচারণা এবং তার ফলে সৃষ্ট পরিকল্পিত সাম্প্রদায়িক প্ররোচনা বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এবং একাত্তরের পরাজিত শক্তি যাতে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সে ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং শান্তিপ্রিয় নির্বাচনমুখী সাধারণ ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলো চিহ্নিত করে নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচনোত্তর সহিংসতা রোধে পর্যাপ্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
বৈঠক শেষে সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জাতীয় নির্বাচন এলেই সংখ্যালঘু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যারা বিশ্বাস করে, তাদের কপালে ভাঁজ পড়ে। আমরা এটা আর দেখতে চাই না। ইসিকে বলেছি, শক্তভাবে দায়িত্ব পালন করবেন। সম্প্রীতি বাংলাদেশের মতো অরাজনৈতিক সংগঠনগুলো সহায়তা করবে। ইসি সহমত পোষণ করেছে।
তিনি বলেন, ২০০১ সালের মতো ব্ল্যাক অক্টোবর আর বাংলাদেশে দেখতে চাই না। যে ভয়াবহতা, নৃশংসতা, যে অত্যাচার ৭১ সালকে মনে করিয়ে দেয়। সে জিনিসগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকে চিরতরে সরিয়ে দিতে চাই। যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে তাদের সরকারে এবং কোনো আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় দেখতে চাই না।
কীসের আতঙ্কে ভুগছেন– সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, আমরা ঘরপোড়া গরুর মতো, অতীতের ভয় থেকে এসেছি। সাবধানের কোনো মার নেই।
কী সহায়তা করতে পারেন ইসিকে– এমন প্রশ্নের জবাবে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কোনো কাজ যদি তারা করেন, আমরা আমাদের ভলানটিয়ার সহযোগিতা দেব। ২০০১ সালে আমরা সারাদেশ ঘুরে নির্যাতন, পাশবিকতার চিহ্ন দেখেছি, বর্বরতার চিহ্ন দেখেছি। সেটা যেন আর না হয়।
এই নাট্যকার বলেন, আমরা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আমরা চাই, এ দেশে বৃহত্তর জনগোষ্ঠী নির্বাচনমুখী হোক। এবারের ভোটারদের মধ্যে তরুণরা বেশি, তাদের আমরা নির্বাচনমুখী করতে বলেছি। এজন্য কেবল ইসি নয়, দলগুলোরও একটা ভূমিকা আছে। সামাজিক সংগঠন, মিডিয়ার ভূমিকাও ফেলে দেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ভোটের উৎসব যদি তরুণদের মধ্যে ফিরিয়ে আনতে পারি, তবে অচিরেই আমরা একটি খোলসমুক্ত নির্বাচন প্রক্রিয়া পাব।
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভয় করছি যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তাদের নিয়ে। যদি বিএনপির ভেতরে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী থেকে থাকে, আমরা দেখেছি যাদের প্রগতিশীল মনে করেছি, তাদের ওখানেই নির্যাতন বেশি হয়েছে। তাই যদি আশঙ্কা করে থাকি, সেটা সমীচীন।
ইসির সঙ্গে বৈঠকে সম্প্রীতি বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। আর ইসির পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনাররা এবং ইসি সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
একে/ আই.কে.জে/