শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সারাবিশ্বে চীনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১২:০২ অপরাহ্ন, ২৬শে এপ্রিল ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

সারাবিশ্বে চীনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি ভারতের প্রতি নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

করোনাভাইরাস মহামারী চলাকালীন সরকার কঠোর লকডাউন আরোপ করলে তা জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করে। এমন অবস্থায় শি জিনপিং নিজেকে দেশের বড় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। একই সাথে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের পর, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখেন। এ ঘটনাগুলোর ফলাফলস্বরূপ, অনেক কোম্পানি এখন আর চীনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী নয়। তারা চীনের বাইরে বিকল্প উৎস খুঁজছে।

যেমন, জার্মান ট্রেড এসোসিয়েশন, ভিডিএমএ এর ভারতীয় শাখার কর্মী রাজেশ নাথ জানান, বিগত ছয় মাসে জার্মান কোম্পানিগুলোর অনেক সিনিয়র প্রতিনিধির সাথে কাজ করার সুযোগ তিনি পেয়েছেন। গোটা বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধান এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এখন ভারতকে বিশ্বাস করেন এবং বৈশ্বিক ক্ষমতা এখন ভারতের হাতের মুঠোয়।

ইতিমধ্যে, ভারত সেমিকন্ডাক্টর, ব্যাটারি এবং মোবাইল কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করার জন্য বহু বিলিয়ন ডলারের একটি প্রোগ্রামের ব্যবস্থা করেছে, যা বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের দ্বারাও বিপুল পরিমাণে প্রশংসিত হয়েছে। 

ভারতীয় অর্থনীতি আজ ব্রিটিশদেরও পেছনে ফেলে দিয়েছে। ভারতের ইস্পাত কারখানাগুলো বিশ্বের মধ্যে বৃহত্তম। তাছাড়াও টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রেও অগ্রসর হয়েছে ভারত। বিশ্বের প্রায় ৫০ শতাংশ শিশু তাদের জীবদ্দশায় ভারতীয় টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, বলিউড সারাবিশ্বে প্রশংসিত। ভারতের মধ্যবিত্ত ছেলেরা আজ নিজ ক্ষমতায় গুগল এবং মাইক্রোসফটের মতো কোম্পানিতে কাজ করছে। অন্যদিকে ভারতীয় অজয় বাঙ্গা বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন।

ভারতের এ উত্থান পশ্চিমাদের জন্যেও সুসংবাদ। কয়েক বছরের মধ্যেই দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ভারত পশ্চিমাদের সমস্ত মূল্যবোধকে আপন করে না নিলেও পশ্চিমাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেকটাই ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

আরো পড়ুন: মোসাদসহ ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইট হ্যাকড

শক্তিশালী আইটি ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের আবাসস্থল হয়ে উঠেছে ভারত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জেপি মরগানের বক্তব্য অনুযায়ী, আগামী দুই বছরের মধ্যে অ্যাপল স্মার্টফোনের প্রায় ২৫ শতাংশ ভারতে উৎপাদিত হবে। তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠান ফক্সকন সম্প্রতি দেশে একটি নতুন মেগা ফ্যাক্টরি নির্মাণের ঘোষণা প্রদান করেছে। চীনে উৎপাদিত পণ্যগুলোর বাজার এখন ভারতে স্থানান্তরিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতে ডিজিটালাইজেশন দেশের দারিদ্র‍্য দূরীকরণের দিকে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। গত ২০ বছরে ৪০ কোটিরও বেশি ভারতীয় দারিদ্র্য থেকে রক্ষা পেয়েছে। বর্তমান জি-২০ প্রেসিডেন্সিকে কাজে লাগিয়ে সমগ্র বিশ্বের আরো কাছাকাছি হচ্ছে ভারত। নতুন হাই স্পিড ট্রেনগুলো ভারতের এক শহর থেকে আরেক শহরে ছুটে চলেছে। আগামী বছরগুলোতে প্রায় ৮০ টি নতুন বিমানবন্দর তৈরি করা হবে।

চলতি বছরে, ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ভারত এবং খুব শীঘ্রই দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতেও পরিণত হবে। এমনকি বিশ্বের অর্থনীতি যেখানে হোঁচট খাচ্ছে সেখানেও ভারতের অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এত মতে, চলতি বছরে ভারত বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির ১৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।

গত ১৪ এপ্রিল, চীনকে পেছনে ফেলে বিশ্বের জনবহুল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় ভারত। চীনের তুলনায় ভারতে যুব সমাজের সংখ্যা বেশি। একইসাথে ভারতে খরচ তুলনামূলক কম এবং সম্ভাবনা প্রচুর।

 

বিশ্ব চীন ভারত

খবরটি শেয়ার করুন