শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হৃদয় কেড়েছে গাজায় জন্ম নেওয়া শিশুর হাসি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৩০ অপরাহ্ন, ২৮শে অক্টোবর ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলায় গাজায় শত শত বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজারের বেশি মানুষের। আহত ২০ হাজারের বেশি, বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। এমন অবস্থার মধ্যে পৃথিবীতে এসেছে জুমানার সন্তান তালিয়া। বিধ্বস্ত গাজায় জন্মের পর তালির বিস্তৃত হাসি নেটিজেনদের হৃদয় কেড়েছে।

গাজার বাসিন্দা জুমানা এমাদ এক মাস আগে গর্ভাবস্থার শেষ পর্যায়ে ছিলেন। আনন্দ নিয়ে সন্তান আগমনের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। জানতেন যে তার মেয়ে হবে। উত্তেজিত ছিল জুমানার স্বামী। প্রস্তুত ছিল হাসপাতালে যাওয়ার ব্যাগও। তার চার বছরের মেয়ে তুলিনও বোনের আগমনের অপেক্ষা করছিল। কিন্তু সেই আনন্দ ধুলোয় মিশে গেছে ইসরায়েল ব্যাপক হামলার পর।

সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে জুমানা বলেন, একটানা বোমার আওয়াজের মধ্যে আমার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। আমি ভয় পেয়েছিলাম।

২৫ বছর বয়সী ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক জুমানা। তিনি ইসরায়েলের হুমকির পর উত্তর গাজার বাড়ি ছেড়ে দক্ষিণে চলে যান। তিনি তার আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন কিন্তু তার সন্তানদের জন্য বাড়তি কোনো কাপড় বা প্রস্তুতি নিতে পারেননি। তিনি বলেন, পরিস্থিতি কঠিন ছিল।

জুমানা জানান, আমরা রাতে ঘুমাইনি। প্রচুর গোলাবর্ষণ হয়েছিল এবং আমাদের অন্য জায়গায় যেতে হয়েছিল। আমার মতো গর্ভবতী মহিলাদের হাঁটতে বের হওয়া উচিত কিন্তু যুদ্ধের কারণে আমরা খাবার কিনতেও বাইরে যেতে পারি না।

জুমানা বারবার বিদ্যুত বিভ্রাট, ইন্টারনেট বিঘ্নিত হওয়া এবং পানির স্বল্পতার কথা বলছিলেন। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে ১৩ অক্টোবর শুক্রবার সন্তান প্রসব করেন জুমানা।

জুমানা গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে হাসপাতালটি অত্যন্ত চাপের মুখে ছিল। পরে জুমানা গাজার ছোট আরেকটি হাসপাতালে যান। সেখানে পাশেই বোমা হামলা করা হচ্ছিল। তীব্র শব্দের মধ্যে অত্যন্ত উদ্বেগে ছিলেন তিনি। তিনি জানান, আমি শুধু ভেবেছিলাম যে যাই হোক না কেন আমি আমার সন্তানের জন্ম দিতে চাই।

জুমানা শুক্রবার রাতে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তার নাম তিনি তালিয়া রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তবে হাসপাতালে এত ভিড় যে তিনি সন্তান জন্মদানের পরও কোনো বিছানা পাননি।

জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) অনুমান করেছে যে, গাজায় প্রায় ৫০ হাজার গর্ভবতী রয়েছেন। তাদের মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি ৩০ দিনের মধ্যে সন্তান প্রসব করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে গাজায় জরুরি ওষুধের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

আরো পড়ুন: কোকাকোলার বিকল্প ‘ডবরি কোলা’, বিক্রিতে রেকর্ড

জুমানা বলেন, এখন পরিস্থিতি অনেক কঠিন। আমরা জানি না আমাদের ভবিষ্যতে কী রয়েছে। কিন্তু যদি সবকিছু স্বাভাবিক থাকতো তাহলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে তালিয়ার আকিকা করতাম। 

হামাস গত ৭ অক্টোবরের হামলায় চালিয়ে ১ হাজার ৪০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২২৪ জন ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। এরপর ইসরায়েল গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে। নারী, শিশুসহ সাধারণ মানুষকে অকাতরে হত্যা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত গাজায় ৭ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।

এসকে/ 

শিশু ফিলিস্তিন যুদ্ধ গাজা ইসরায়েল জন্ম

খবরটি শেয়ার করুন