শুক্রবার, ৫ই জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২১শে আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘চীনের ঋণের ফাঁদে পড়া যাবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৮:৩১ অপরাহ্ন, ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৩

#

‘চীনের উত্থান: উদ্বিগ্ন প্রতিবেশি’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

চীন ভূরাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য এই অঞ্চলে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। তাদের কাছ থেকে ঋণ সহায়তা নেওয়ার আগে ভাবতে হবে। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে খাল কেটে কুমির ডেকে আনা হচ্ছে কিনা সেদিকে নজর রাখতে হবে। নিজ দেশের স্বার্থ রক্ষা করে পরাশক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখাসহ বৈদেশিক নীতি পরিচালনা করতে হবে।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রেস ক্লাবে ‘চীনের উত্থান: উদ্বিগ্ন প্রতিবেশি’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর (মানিক) রচিত এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের সময় মূখ্য আলোচকের বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির। 

এ সময় তিনি বলেন, চীনের প্রতিবেশিরা চীনকে নিয়ে সবসময় উদ্বিগ্ন ছিল। অন্যান্য দেশের স্বাধীনতায় সহায়তা করলেও চীন বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিরোধিতা করেছে। ভারতের সঙ্গে বৈরিতায় চীনের পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়। চীনের নিজস্ব ভূরাজনৈতিক স্বার্থের বাইরে কাউকে সাহায্য করেনি। চীন ও ভারতের সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে। সম্প্রতি চীন ভারতের দুটি রাজ্যকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করেছে। 

তিনি আরও বলেন, চীনের ঋণের ফাঁদে পড়েছে শ্রীলঙ্কা, এর আগে একইভাবে পাকিস্তানও ঋণের ফাঁদে পড়েছিল। এই দুটি দেশকেই একটি করে বন্দর চীনকে দিয়ে দিতে হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে বলেছেন, ‘আমেরিকা যার বন্ধু তার শত্রু দরকার হয় না।’ এখন এটিও বলা যায়, চীন যার বন্ধু তারও শত্রুর প্রয়োজন হয় না। চীন-ভারতের সঙ্গে সমান বন্ধুত্ব আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। চীন চেপে ধরবে একসময়। চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আমরা খাল কেটে কুমির ডেকে আনছি কিনা সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টদের দেখতে হবে।

আরো পড়ুন: গানসু প্রদেশের বৌদ্ধদের উপর চীনা হামলার হুমকি

এ সময় ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, চীন নমনীয় নয়। যে রাষ্ট্র বড় হবে তারাই আধিপত্য বিস্তার করতে চাইবে। এখন চীনের আধিপত্য বিস্তারের সময়। মিয়ানমারে চীন, রাশিয়া, ভারতসহ কেউ আমাদের সেরকম সাহায্য করছে না। ভারত আমাদের বন্ধু হলেও আমাদের পক্ষে আসছে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা এখন গরীবের বউ হয়ে গেছি। এই সময়ে সমদূরত্বের কথা বলা হচ্ছে, এটাও রক্ষা করা কঠিন। চীনের বিরুদ্ধে বলতেও ভেবেচিন্তে বলতে হয়। একদিকে গিয়ে আমরা সুবিধা করতে পারবো না। যেদিকে আমাদের স্বার্থ আছে সেদিকে যেতে হবে।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মোহাম্মাদ আলী শিকদার। তিনি বলেন, চীন নিজের শক্তিতে উত্থান করেছে। চীনকে আমরা উপেক্ষা করতে পারবো না, তাই তাদের জানতে হবে। চীন যে প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছে- এতে সংঘাত অনিবার্য। এই অঞ্চলের দেশগুলোকে এই সংঘাত এড়াতে সচেষ্ট হতে হবে।

বইয়ের লেখক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর (মানিক) বলেন, কোনো দেশই নিজের সুবিধার বাইরে যায় না, কিন্তু চীন এই ব্যাপারে আরও বেশি একাট্টা। চীনের ঋণের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ অনেক দেশ সর্বস্বান্ত হয়েছে। চীনের অশুভ উদ্দেশ্য হচ্ছে, বাংলাদেশে ঘাঁটি করে ভারতের বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করা, এটা আমাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হবে।

বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।

এসকে/ 

চীন পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঋণের ফাঁদ শাহরিয়ার কবির

খবরটি শেয়ার করুন