ছবি : সংগৃহীত
শীতকে উপেক্ষা করে দেশ পরিচালনার নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন দেশবাসী। বিএনপি ভোট বর্জন করায় এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় এক প্রকার নিশ্চিত। তবে ভোটের দুদিন আগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে জনগণের মধ্যে। এ কারণে ভোট শুরু হলেও ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম। অবশ্য পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে অনেকেই শীত উপেক্ষা করে সকালেই ছুটে এসেছেন।
রোববার (৭ই জানুয়ারি) সকালে ঢাকার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। কোথাও কোথাও ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই ভোটার ভোটকেন্দ্রে এসে লাইনে দাঁড়ান। ৮টা বাজতেই ভোট দেওয়ার কক্ষে প্রবেশ করতে থাকেন ভোটাররা।
রামপুরা সালামবাগ জামে মসজিদ ও জামিয়া আনওয়ারুল উলূম মাদরাসা ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টার আগেই ভোটের লাইনে দাঁড়ানো একজন জানান, আগে আগে ভোট দেওয়ার জন্য সকালে চলে এসেছি। বাসায় কাজ আছে তাই সকালে ভোট দিতে এসেছি।
রামপুরার বাসিন্দা জানান, ভোটারদের মধ্যে আগের মতো আর উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। আগে দেখতাম ভোটের আগেই ভোট দিতে মানুষের দীর্ঘ লাইন হয়ে যেত। এখন সেই দৃশ্য খুব একটা নেই। মানুষের মনের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, ভোটের আগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে লাগা আগুন মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। এছাড়া গত কয়েক দিন ধরে ভালো শীত পড়েছে। এসব কারণে সকালে ভোটার উপস্থিতি কম। তবে দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও একজন বলেন, শীতের সকাল হওয়ার কারণে শুরুতে ভোটারদের উপস্থিতি কম। আমাদের ধারণা ১০টার পর থেকে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়বে। এখন ভোট কেন্দ্রগুলোতে প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা বেশি রয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকার মানুষ ঘুম থেকে এমনিতেই দেরি করে ওঠে। তার ওপর কয়েকদিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। ফলে বেশিরভাগ ভোটার এখনো ঘুমিয়ে আছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়বে। ভোট দেওয়ার মূল চাপ (ভোটারদের উপস্থিতি) আসবে দুপুরে।
এদিকে যারা ভোট দিচ্ছেন তারা ভোট দিয়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করছেন। আজিমন নামের এক ভোটার ভোট দিয়ে গণমাধ্যমকে জানান, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়েছি। ভোট দেওয়া খুব সহজ। ভোটের পরিবেশ খুব ভালো।
এবারের নির্বাচনে ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এক হাজার ৯৭০ প্রার্থী। ২৮টি রাজনৈতিক দলের হয়ে লড়াই করছেন এক হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন ৪৩৬ জন। নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করায় ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি। ফলে এবার ২৯৯ আসনে ভোট হচ্ছে।
আরো পড়ুন : ভোট দিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থী তালিকায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ১৩৫ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের ৯৬ জন, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের ৩৯ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ৪২ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা-লীগের ৩০ জন, গণফোরামের নয়জন, গণ-ফ্রন্টের ২১ জন, জাকের পার্টির ২১ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৬৬ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের দশজন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ৩৫ জন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির ১৬ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের ১১ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির পাঁচজন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ৫৬ জন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের ৩৮ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) পাঁচজন, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফের ৪৫ জন, বাংলাদেশ মুসলিম-লীগের চারজন, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির ৭৯ জন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের ৬৩ জন, বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির ২৬ জন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) চারজন, গণতন্ত্রী পার্টির দশজন।
এস/ আই. কে. জে/