নীলফামারীর নীলসাগর পর্যটনকেন্দ্রে দুই সাংবাদিক। ছবিটি গতকাল শুক্রবার (২৭শে জুন) শাহজাদা এমরানের ফেসবুক থেকে নেওয়া
নীলফামারীর নীলসাগর পর্যটনকেন্দ্রে ঘুরতে গিয়ে কুমিল্লার দুই সাংবাদিক 'নিখোঁজ' হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার (২৮শে জুন) সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন নিখোঁজ এক সাংবাদিকের স্ত্রী। তবে সীমান্ত এলাকায় 'সন্দেহজনক ঘোরাঘুরির' সময় ওই দুই সাংবাদিককে আটকের কথা সুখবর ডটকমকে মুঠোফোনে জানিয়েছেন নীলফামারীর পুলিশ সুপার এ এফ এম তারিক হোসেন খান।
ঠিক কী অভিযোগে ওই দুই সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য জানতে পারেনি সুখবর ডটকম। কুমিল্লার স্থানীয় সাংবাদিকদের একটি সূত্র জানিয়েছে, সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের আটক করা হয়েছে। 'রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে' জড়িত থাকার সন্দেহে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তারা বর্তমানে গোয়েন্দা হেফাজতে আছেন।
যোগাযোগ করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, এ বিষয়ে তারা বিস্তারিত বলতে পারছেন না। তবে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম মুঠোফোনে সুখবর ডটকমকে বলেন, ওই থানায় 'নিখোঁজের' একটি ডায়েরি হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। 'নিখোঁজ' সাংবাদিকদের অবস্থান শনাক্ত করতে সংশ্লিষ্ট থানা ও বিভাগকে জানানো হয়েছে।
'নিখোঁজ' ব্যক্তিরা হলেন শাহজাদা এমরান ও তারিকুল ইসলাম তরুণ। শাহজাদা কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আমাদের কুমিল্লা পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও কুমিল্লা জেলা সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তারিকুল ইসলাম দৈনিক মানবকণ্ঠের কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি। শাহজাদার লেখা বইও প্রকাশিত হয়েছে বলে স্থানীয় একাধিক সাংবাদিক জানিয়েছেন।
জিডি সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা নগরীর টমসম ব্রিজ এলাকার শওকত ভিলার বাসিন্দা শাহজাদা এমরান ও তার সহকর্মী নগরীর কালিয়াজুড়ির বাসিন্দা তারিকুল ইসলাম তরুণ গত ২৬শে জুন (বৃহস্পতিবার) নীলফামারী ভ্রমণে যান। কিন্তু ওই রাত থেকেই তাদের সঙ্গে পরিবারের কেউ যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাদের মোবাইল ফোন সেট বন্ধ থাকায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
শাহজাদা এমরানের স্ত্রী জাহেরা আক্তার জানান, তার স্বামী সাংবাদিকতা পেশার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণে বের হন। এটা তার নেশা ও শখ। কিন্তু এবারের ঘটনায় তার স্বামী ও সহকর্মীর কোনো খোঁজ না পাওয়ায় তিনি উদ্বিগ্ন, আতঙ্কিত। তার স্বামী ও তারিকুল ইসলামের মোবাইল ফোন নম্বর বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘নীলফামারীতে সীমান্ত এলাকায় ঘুরতে যাওয়ায় তাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন আমাদের কোনো তথ্য দিতে পারছে না।’
শাহজাদা এমরানের ছেলে আবির নিহাল বলেন, ‘শুনেছি নীলফামারীতে আমার বাবাকে আটক করেছে বিশেষ বাহিনী। তবে কে, কখন ও কোথায় থেকে আটক করেছেন, কোনো তথ্য পাচ্ছি না। একবার শুনি নীলফামারীতে আছেন বাবা, আবার শুনি ঢাকায় নিয়ে গেছে। এ নিয়ে আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি।’
নীলফামারীর পুলিশ সুপার এ এফ এম তারিক হোসেন খান বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করে একটি বিশেষ বাহিনী। তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে শুনেছি, এর বেশি কিছু জানতে পারিনি। এ বিষয়ে আরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।’
খবরটি শেয়ার করুন