শনিবার, ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যার্তদের মাঝে যে ধরনের খাবার দেওয়া উচিত

লাইফস্টাইল ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৩:৩০ অপরাহ্ন, ২৮শে আগস্ট ২০২৪

#

ছবি : সংগৃহীত

বর্তমানে বন্যার্তদের সাহায্যে বিপুলসংখ্যক মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় যে পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়েছে, তা অভূতপূর্ব ও আশা–জাগানিয়া। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যার পর প্রথমবারের মতো এত বেশি সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ দেখা গেলো। একটা ইতিবাচক মনোভাব থেকেই সাধারণ মানুষ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন, যেন বন্যার্তরা অভুক্ত না থাকে। কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারছেন না, ঠিক কী ধরনের খাবার ত্রাণসামগ্রী  হিসেবে দেওয়া উচিত।

এ উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও দেখা যাচ্ছে, ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে যে ধরনের খাবার বিতরণ করা হচ্ছে, তা কোনো কোনো ক্ষেত্রে হিতে বিপরীত হতে পারে। যেমন অনেক জায়গায় প্রচুর পরিমাণ গুঁড়া দুধ, বাণিজ্যিকভাবে তৈরি জুস, নুডলস, কেক, বিস্কুট ইত্যাদি বিতরণ চলছে। সহজে পচনশীল খাবারও থাকতে পারে; যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াবে।

এর বাইরে বাক্স, প্যাকেট, কার্টন বা বস্তা ইত্যাদি ভরে নানা খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া হচ্ছে একেকটি পরিবারের হাতে। এই খাবারের প্যাকেজ বাইরে থেকে দেখে কোনোভাবে বোঝার উপায় নেই যে এসব খাবার কতজনের জন্য বা কত দিনের জন্য দেওয়া হচ্ছে। এসব প্যাকেজের খাবার ছোট শিশু বা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য প্রযোজ্য কি না, তা–ও বোঝার উপায় নেই।

আরো পড়ুন : শতচেষ্টায়ও ধূমপান ছাড়তে পারছেন না, ভরসা রাখুন কলায়!

অনেকেরই হয়তো অজানা যে ত্রাণসামগ্রী হিসেবে খাবার বিতরণের একটা সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর ও জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে ২০২০ সালে একটি নির্দেশিকা তৈরি হয়। যেখানে বিভিন্ন খাবারের পুষ্টিমান যাচাইয়ের ভিত্তিতে একটি পরিবারের জন্য সাত দিনের খাবার প্যাকেজ ও পরিমাণের উল্লেখ আছে। প্যাকেজটি এমনভাবে নির্বাচন করা উচিত যেখানে বিপর্যস্ত সময়ের প্রথম কয়েক দিন এ খাবার পাঁচ সদস্যের একটি পরিবারের ন্যূনতম পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। এমনকি পরিবারে যদি ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সের শিশু থাকে, তাকেও এ খাবার খাওয়ানো যাবে।

প্যাকেজটিতে আছে ১২ কেজি চাল, পুষ্টিসমৃদ্ধ তেল ১ দশমিক ৪ লিটার, ১ দশমিক ৪ কেজি মসুর ডাল, পৌনে ২ কেজি চিড়া, আধা কেজি আয়োডিনযুক্ত লবণ, ২০০ গ্রাম চিনি বা গুড়, ২ কেজি মটর বা মুগ ডালভাজা। বলা আছে, ত্রাণের উপকরণে খেসারি ডাল দেওয়া যাবে না। কারণ, এই ডালে এমন একটি উপকরণ আছে, যা বেশি খেলে ল্যাথারিজম নামক রোগ হয়। চিনির বদলে গুড় দিলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। দুর্যোগের সময় যেহেতু নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায় না আর রান্নার সুবিধাও থাকে না, তাই ত্রাণসামগ্রী  বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এমন উপকরণ বেছে নিতে হবে, যেগুলোয় ভিটামিন ও খনিজ বেশি থাকে।

ত্রাণকাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তারা যদি বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর ও জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের এ নির্দেশিকা অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের পরিবারের জন্য সাত দিনের একটা প্যাকেজ করে খাবার বিতরণ করেন, তাহলে দুর্যোগের সময় পীড়িতদের দুর্ভোগ কম হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যহানির আশঙ্কাও কমবে।

এস/কেবি

টিপস বন্যার্তদের ত্রাণ

খবরটি শেয়ার করুন