ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে একটি বড় রায় দিয়েছেন। এ রায়ের ফলে এখন থেকে নিম্ন আদালতগুলোর পক্ষে প্রেসিডেন্টের ঘোষিত নীতিগুলো দ্রুত দেশব্যাপী আটকে দেওয়া অনেক কঠিন হবে। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার (২৭শে জুন) ৬-৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দেওয়া এ রায়ে বিচারপতিরা বিচারকদের ক্ষমতা সীমিত করেছেন। প্রেসিডেন্টের কোনো নীতি কোনো স্থানীয় আদালত চাইলেই আর তাৎক্ষণিকভাবে সারাদেশে স্থগিত করতে পারবেন না। যদিও প্রেসিডেন্টের নীতিগুলোর আইনি বৈধতা নিয়ে বিচার প্রক্রিয়া চলতে বাধা নেই।
মামলাটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব’ সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশকে কেন্দ্র করে শুরু হলেও রায়ে সরাসরি ওই আদেশের বৈধতা নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, এ রায় ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। কারণ এটি ভবিষ্যতে তার নতুন নীতিগুলো কার্যকর করা সহজ করে দেবে। খবর রয়টার্স ও আল জাজিরার।
রায় ঘোষণার পরপরই হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটিকে একটি ‘অসাধারণ সিদ্ধান্ত’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বড় সিদ্ধান্ত, যা নিয়ে আমরা খুবই খুশি।’
এর আগে ট্রাম্পসহ সাবেক প্রেসিডেন্টরা বছরের পর বছর ধরে ‘দেশব্যাপী স্থগিতাদেশ’ জারির বিষয়ে অভিযোগ করে আসছিলেন। ট্রাম্প বারবার বলেছেন, অতীতের যে কোনো প্রেসিডেন্টের চেয়ে তার বিরুদ্ধে অনেক বেশি এমন আদেশ জারি করা হয়েছে, যা তার নীতিগুলো কার্যকর করতে বাধা দিয়েছে। যেমন, অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো বা সামরিক বাহিনীতে রূপান্তরকামীদের নিয়োগ নিষিদ্ধ করার মতো নীতিগুলো আদালতের আদেশের কারণে সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল।
আদালতের এ রায়ের কঠোর বিরোধিতা করেছেন উদারপন্থী তিন বিচারপতি। তাদের মতে, এ সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্টের বেআইনি কার্যকলাপকে উৎসাহিত করবে এবং আইনের শাসনের জন্য একটি বড় হুমকি তৈরি করবে। বিচারপতি সোনিয়া সটোমায়র তার ভিন্নমত প্রকাশ করে বলেছেন, আদালত ‘লজ্জাজনকভাবে’ প্রশাসনের ‘চাতুরীর’ সঙ্গে তাল মিলিয়েছেন। তিনি মনে করেন, এ রায়ে সরকার সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার জন্য একটি উন্মুক্ত আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আদালতের এ রায়ের পর ট্রাম্পের নীতিগুলোর বিরোধিতাকারীরা এখন আইনি লড়াইয়ের কৌশল পরিবর্তন করতে পারেন। তারা এখন ‘ক্লাস-অ্যাকশন’ মামলার দিকে ঝুঁকবেন, যেখানে একজন বাদী একই রকম পরিস্থিতির শিকার হওয়া বৃহত্তর একটি গোষ্ঠীর পক্ষে মামলা করেন। এর মাধ্যমেও নীতিগুলো স্থগিত করা সম্ভব হতে পারে। তবে এ প্রক্রিয়াটি আরও জটিল এবং সময়সাপেক্ষ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের দ্বিতীয় বড় বিজয়। এর আগে গত বছর ৬-৩ সংখ্যাগরিষ্ঠতার আরেক রায়ে আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন যে, প্রেসিডেন্টরা দায়িত্বে থাকাকালীন নেওয়া পদক্ষেপের জন্য ফৌজদারি মামলা থেকে দায়মুক্তি পাবেন।
খবরটি শেয়ার করুন