বুধবার, ২৩শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্য’ সংহত করতে ৪ দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার জরুরি বৈঠক *** লিটন দাস জয় উৎসর্গ করলেন নিহতদের স্মরণে *** সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতে সিরিজ বাংলাদেশের *** বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের সব দাবি যৌক্তিক বলে মনে করে সরকার *** বিএনপি-জামায়াতসহ চার দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা *** প্রধানমন্ত্রী দলীয় প্রধান হতে পারবেন না—এই দাবির যৌক্তিকতা নেই: সালাহউদ্দিন *** আখের চিনি দিয়ে ‘ট্রাম্প ভার্সন’ বাজারে আনছে কোকা-কোলা *** বিমান বিধ্বস্তে হতাহতদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে সরকার: প্রেস উইং *** ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থার উন্নতি, ফিরেছেন বাসায় *** জাকেরের ফিফটিতে পাকিস্তানকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিল বাংলাদেশ

চাপ বাড়বে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর

সম্পাদকীয়

🕒 প্রকাশ: ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, ৮ই জুলাই ২০২৫

#

ছবি: সংগৃহীত

নতুন অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের জন্য এক গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ শ্রেণির মানুষের সাধারণত স্থায়ী কোনো আয়ের উৎস নেই, তাদের নিরাপদ বিনিয়োগের অন্যতম ভরসা সঞ্চয়পত্র। এখানে সুদ কমে যাওয়ার মানে তাদের দৈনন্দিন খরচ মেটানোর সক্ষমতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়া।

সরকার প্রাথমিকভাবে আগামী ছয় মাসের জন্য সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কমিয়েছে। যা ১লা জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। এক প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বলেছে, নতুন হার অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রের সর্বোচ্চ সুদহার হবে ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন সুদহার হবে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সরকারকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত দিয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো। এ মুহূর্তে সংস্থাটির শর্ত বাস্তবায়ন করা ছাড়া হয়তো সরকারের কাছে কোনো বিকল্প ছিল না। তবু প্রশ্ন হলো, সরকারের ঋণ প্রাপ্তির শর্ত পূরণের দায় কেন সাধারণ জনগণের ওপর চাপানো হচ্ছে?

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে সীমিত আয়ের মানুষের জন্য কোনো সুখবর দেননি। দুই বছর ধরে মূল্যস্ফীতি দাপট দেখালেও আয়করের সীমা না বাড়ানোয় তাদের কপালে ভাঁজ থেকেই গেছে। সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি যাদের বার্ষিক আয়, তাদের আয়কর দিতে হচ্ছে। চলতি অর্থ বছরের বাজেটে করমুক্ত আয়সীমাও বাড়ানো হয়নি।

মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের একাংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের লভ্যাংশের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং এখনো আছেন। সরকারের নতুন সিদ্ধান্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যে দেখা গেছে। পৃথিবীর সব কল্যাণকামী রাষ্ট্রেই প্রবীণ, অসমর্থ ও অবসরভোগী মানুষের জন্য আর্থিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে। সেটি কোথাও নগদ অর্থ বা কম দামে পণ্য কেনার সুযোগের মাধ্যমে। 

আমাদের দেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এতটাই ভঙ্গুর যে, খুব কম মানুষ এর থেকে সুবিধা পান। বিগত সরকারের স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির কারণে সেই নিরাপত্তা কর্মসূচির সুফল যাদের পাওয়ার কথা, তারা পাননি। সে ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের একাংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের লভ্যাংশের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন এবং এখনো আছেন।

সরকার কম বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুদহার তুলনামূলকভাবে বেশি দেওয়ায় অপেক্ষাকৃত সীমিত আয়ের মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন, যদিও তা আগের মতো নয়। কম বিনিয়োগে বেশি সুদের হার এবং বেশি বিনিয়োগে কম সুদের হার—সরকারের এ নীতি সঠিক বলে মনে করি। আমরা মনে করি, এ ক্ষেত্রে সীমা সাড়ে ৭ লাখ থেকে বাড়িয়ে ১০ লাখ করা যেতে পারে। কেননা, সাড়ে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে একজন মানুষ মাসে যে লভ্যাংশ পাবেন, তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয় কোনোভাবেই।

সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমানো

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন