বুধবার, ১৩ই নভেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জ্বীনের মাধ্যমে এক রাতেই নির্মিত হয়েছিল যে মসজিদ

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৩৩ অপরাহ্ন, ১০ই নভেম্বর ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো মুঘল আমলের এক গম্বুজ পীরগঞ্জ জামে মসজিদ। শাহ্ মোহাম্মদ আফতাফ উদ্দিন চিশতী ওরফে আফু শাহ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে নবগঙ্গা পেরিয়ে ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে চুয়াডাঙ্গার ঠাকুরপুর গ্রামে এসে মসজিদটি নির্মাণ করেন।

বর্তমানে মসজিদটিতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। দূর-দূরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ নামাজ পড়তে ও মানত শোধ করতে আসেন। মসজিদটি প্রাচীন ও ইসলামিক স্থাপত্যনিদর্শন সমৃদ্ধ। মসজিদটিতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।

১৬৯৮ সালের দিকে শাহ্ মোহাম্মদ আফতাফ উদ্দিন চিশতী ওরফে আফু শাহ নদীপথে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মাথাভাঙ্গা ও নবগঙ্গা বেয়ে চুয়াডাঙ্গার ঠাকুরপুর গ্রামে এসে আস্তানা গাড়েন। তিনি সাধক ছিলেন। ধর্ম প্রচার-প্রসার যার লক্ষ্য ছিল। প্রচলিত আছে, জ্বীনদের সাহায্য নিয়ে এক রাতেই মসজিদটি নির্মাণ করেন আফু শাহ। অনেকের ধারণা, আফু শাহ অলৌকিক শক্তি দিয়েই মসজিদটি নির্মাণ করেন। খাজনা বাকি হলে তাকে জমিদার দরবারে ডেকে নিয়ে যান প্রজারা। তিনি অলৌকিকভাবে তাদের আগে পৌঁছে যান জমিদার দরবারে। বিষয়টি রাজা জানার পর জমি দান করেন আফু শাহকে। সেখানে এক গম্বুজ মসজিদ নির্মাণ করেন।

হাতে তৈরি পাতলা ইট আর চুন-সুড়কির গাঁথুনিতে তৈরি হয় এক গম্বুজ মসজিদ। মসজিদের ভেতরে দুই কাতারে নামাজ আদায় করা যায়। মূল কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখেই বর্তমানে মসজিদটি সংস্কার করে বড় পরিসরে তিন গম্বুজ করা হয়েছে। ১২ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে পীরগঞ্জ মসজিদটি। নারীদের নামাজ পড়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। মানুষের দেয়া অর্থেই পরিচালিত হয় মসজিদটি।

প্রতি বৃহস্পতিবার নারী-পুরুষ, শিশুসহ সব বয়সের মানুষ মসজিদে ছুটে আসেন রোগবালাই, বিপদসহ নানা সমস্যা থেকে মুক্তিলাভের আশায়। নামাজ আদায়, দোয়া-দরুদ পড়ে প্রার্থনা করলে মনের বাসনা পূরণ হয় বলে অনেকে পানি ও তেলের বোতল রেখে যান। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ধর্মপ্রাণ মানুষ ছুটে আসেন। প্রতিবছর ১২ই ফাল্গুন মসজিদে বার্ষিক ইছালে সওয়াব অনুষ্ঠিত হয়।

স্থানীয়দের ধারণা, মসজিদটি রাতের বেলায় যেকোনো সময় অলৌকিকভাবে নির্মাণ হয়েছে। কারণ, সকালে উঠে মসজিদটি দেখা যায়। আফু শাহ প্রায় ৫০০ বছর আগে ইসলাম ধর্ম প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে আসেন চুয়াডাঙ্গার ঠাকুরপুর গ্রামে।

চুয়াডাঙ্গার কুলচারা গ্রামের খাইরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মুরুব্বিদের মুখে শুনেছি, এক গম্বুজ পীরগঞ্জ জামে মসজিদটি এক রাতে নির্মাণ হয়েছে। মসজিদটি অনেক সুন্দর। দূর-দূরান্ত থেকে সব বয়সের মানুষ মসজিদটি দেখতে ছুটে আসেন। মসজিদে এলে মন জুড়িয়ে যায়। প্রতিবছর ওরসের সময় এখানে আসি।’

পীরগঞ্জ জামে মসজিদের ইমাম মুফতি আব্দুর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার মধ্যে একটি ঐতিহ্যবাহী মসজিদ। মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পেরে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। সাধারণ মানুষ মন থেকে নিয়ত করলে তা পূরণ হয়। স্থানীয়দের নামাজ পড়াতে পেরে ভালো লাগে। শাহ্ মোহাম্মদ আফতাফ উদ্দিন চিশতী ওরফে আফু শাহ মূলত এই এলাকায় ইসলাম প্রচার করতে এসে মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়।’

ওআ/ আই.কে.জে/

মসজিদ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন