ছবি : সংগৃহীত
ঔপনিবেশিক আমলের বিচার ব্যবস্থা গণপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে যদিও তা উত্তারাধিকার হিসেবে পাওয়া ছিল। এ মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট ‘গণবিপ্লবে’ জনগণের অভিপ্রায় প্রতিফলিত হয়েছে। একটি গণমুখী, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রকাঠামো বিনির্মাণে বাংলাদেশের জনগণের পরম চাওয়া এই গণবিপ্লব।
এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একটি দেশের জন্য স্বাধীন বিচার বিভাগ থাকা কতটা জরুরি তা পুনরায় উঠে এসেছে বলে তিনি মনে করেন।
মঙ্গলবার (১২ই নভেম্বর) থাইল্যান্ডের ব্যাংককে একটি কনফারেন্সে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে সুপ্রিম কোর্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। ব্যাংককে ‘ অ্যাচিভিং জাস্ট সোসাইটিস: ইনক্লুসিভ জাস্টিস পাথওয়েস ফর পিপল অ্যান্ড প্ল্যানেট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক এই রিজিওনাল কনফারেন্সে তিনি ‘কি-নোট স্পিকার’ ছিলেন।
ইউএনডিপি, থাইল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব জাস্টিস, ইউনেপ, আইডিএলও, ইউনেসকো, ইউনিসেফ, ইউএন উইমেন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক, পাথফাইন্ডার্স ও ওয়ারল্ড জাস্টিস প্রজেক্ট আয়োজিত এ সম্মেলনে এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘কলোনিয়াল লিগ্যাসি’ হিসেবে যে আনুষ্ঠানিক বিচার ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে, অনেক সময়ই তা গণপ্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়। তারই সূত্র ধরে এই অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের শত বছরের প্রচলিত ঐতিহ্যবাহী বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আধুনিক যুগে নতুন করে প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তৃণমূল পর্যায়ে আইনি প্রতিকার তথা ‘কমিউনিটি জাস্টিস’ নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের গ্রাম আদালতসমূহের সাফল্যের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি বলেন, যে ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-অর্থনৈতিক অবস্থা নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক বিচারব্যবস্থা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ বদ্ধপরিকর।
এ বিষয়ে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাসহ বিচার বিভাগ সংস্কারে তার ঘোষিত রোডম্যাপ তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব ওই রোডম্যাপে রয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ‘সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল’ পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ জনবান্ধব বিচার ব্যবস্থা বিনির্মাণের মাধ্যমে ‘ইনক্লুসিভ জাস্টিস’ নিশ্চিত করতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য আঞ্চলিক কৌশলপত্র প্রণয়নে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
আই.কে.জে/
খবরটি শেয়ার করুন