শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৯৪তম জন্মদিন আজ

সুপ্রিয়া দেবীর সাথেই শেষ জীবন কাটিয়েছেন উত্তম কুমার

বিনোদন ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০১:৩৬ অপরাহ্ন, ৩রা সেপ্টেম্বর ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

অভিনয় দিয়ে মন জয় করেছিলেন কোটি বাঙালির। রূপালি পর্দা ছাড়িয়ে তিনি হয়ে উঠেছিলেন রুচিবান-মার্জিত বাঙালির আদর্শ পুরুষও। তিনি আর কেউ নন, বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক উত্তম কুমার। আজ তার ৯৪তম জন্মদিন।

নাম অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু কোটি দর্শক চেনে উত্তম কুমার নামে। তিনি বাংলা সিনেমার মহানায়ক। বলা হয়ে থাকে, একজন পুরুষ সিনেমাতে যত ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন তার সবগুলোই করেছেন তিনি।

সাধারণ এক পরিবার থেকে এসেও অভিনয়ে অসামান্য দক্ষতা দেখিয়ে বাংলা চলচ্চিত্র থেকে তিনি পেয়েছিলেন ‘মহানায়ক’ খেতাব। ১৯২৬ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার প্রকৃত নাম অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। পিতা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায় এবং মা চপলা দেবী। তিন ভাইবোনের মধ্যে উত্তম কুমার ছিলেন সবার বড়।

কলকাতার সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে তিনি গোয়েঙ্কা কলেজে ভর্তি হন। কলকাতার পোর্টে চাকরি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করলেও পড়াশোনা আর এগোয়নি। ১৯৪৮ সালে ‘দৃষ্টিদান’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে উত্তম কুমারের অভিনয়জীবন শুরু হয়েছিল। তবে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘মায়াডোর’। ‘বসু পরিবার’ ছবিতে তিনি প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ মুক্তি পেলে চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন লাভ করেন। এই ছবিতে তিনি কালজয়ী নায়িকা সুচিত্রা সেনের বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’-এর মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়েছিল।

পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে এ জুটি ব্যবসায়িকভাবে সফল এবং প্রশংসিত কয়েকটি চলচ্চিত্রে মুখ্য ভূমিকায় একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। উত্তম কুমার বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন।

তিন দশকের অভিনয় জীবনে বাংলা-হিন্দি মিলিয়ে দুশো'র বেশি চলচ্চিত্রে দেখা গেছে উত্তম কুমারকে। তবে বেশিরভাগ ছবিই বাণিজ্যিক সফলতার মুখ দেখেনি। এরপরও মহানায়কের আসনে উত্তম কুমারকে বসাতে একটুও দ্বিধা করেনি। 'এ্যান্টনি ফিরিঙ্গি' ও 'চিড়িয়াখানা' ছবিতে অসামান্য অভিনয় দক্ষতার জন্য উত্তম কুমার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। চিড়িয়াখানা ছাড়াও সত্যজিৎ রায় উত্তম কুমারকে নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন 'নায়ক'।

ব্যক্তিজীবনে এই মহানায়ক ভালোবেসেছিলেন গৌরী দেবীকে। পরে ১৯৪৮ সালের ১লা জুন তাদের শুভ পরিণয় সম্পন্ন হয়। তাদের একমাত্র সন্তান গৌতম চট্টোপাধ্যায় মাত্র ৫৩ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যান। টালিউডের অভিনেতা গৌরব চট্টোপাধ্যায় উত্তম কুমারের একমাত্র নাতি। ১৯৬৩ সালে উত্তম কুমার তার স্ত্রী ও পরিবার ছেড়ে চলে যান অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর বাসায়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মহানায়ক দীর্ঘ ১৭ বছর তৎকালীন সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে বসবাস করেন। উত্তম কুমার মারা যান ১৯৮০ সালের ২৪শে জুলাই।

আরও পড়ুন: এই বাংলাটাই দেখতে চেয়েছিলাম : মিঠুন

এদিকে সম্প্রতি হইচইয়ে মুক্তি পেয়েছে উত্তম কুমারকে নিয়ে নির্মিত সিনেমা ‘অতি উত্তম’। চার বছরের গবেষণা, উত্তম কুমারের ৬২টি ছবি বারবার দেখে, প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে, ভিএফএক্স বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে অগণিত বৈঠকের পর ছবিটি তৈরি করেছেন সৃজিত মুখার্জি। ছবিটিতে উত্তম কুমারের চরিত্রে তাকেই দেখা গেছে। ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে কৃষ্ণেন্দু ও সোহিনীকে ঘিরে। তাদের প্রেমের অনেকটাই জুড়ে আছেন উত্তম কুমার। কৃষ্ণেন্দুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনিন্দ্য সেনগুপ্ত। রোশনি ভট্টাচার্যকে দেখা গেছে সোহিনীর চরিত্রে। উত্তম কুমারের নাতির চরিত্রে আছেন গৌরব চট্টোপাধ্যায়।

এসি/কেবি

উত্তম কুমার সুপ্রিয়া দেবী

খবরটি শেয়ার করুন