ছবি : সংগৃহীত
আদিম যুগে পূর্ণবয়ষ্ক মানুষের খাদ্য তালিকায় শক্ত ও আঁশযুক্ত খাবারের পরিমাণ বেশি ছিল, তাই খাবার পেষণে সাহায্যের জন্যই আক্কেল দাঁতের আবির্ভাব হয়েছিলো ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। অনেকেই মজা করে বলে থাকেন আক্কেল দাঁত উঠলে, আমাদের আক্কেল বাড়ে। তাহলে আক্কেল দাঁতের সঙ্গে আসলেই কি আমাদের আক্কেল হওয়ার যোগসূত্র আছে?
আক্কেল দাঁত কী
সাধারণত আমাদের দাঁতের দুই পাটিতে মোট ৩২টি দাঁত থাকে। তবে মানুষভেদে কমবেশি হয়ে থেকে। মুখের ভেতরের দিকে দাঁতের পাটির একদম শেষ দিকের দাঁতগুলো মাড়ির দাঁত নামে পরিচিত। ওপরে-নিচে মাড়ির দাঁতের একদম শেষ চারটি দাঁতকে বলা হয় আক্কেল দাঁত। অন্যান্য দাঁতের মধ্যে এগুলোই সবচেয়ে বেশি বড় হয়। সাধারণত ১৭-২৫ বছর বয়সের মধ্যে আক্কেল দাঁত গজায়। অবশ্য অনেকের ক্ষেত্রে ৪০-৫০ বছরেও এই দাঁত গজানোর দৃষ্টান্ত আছে।
আরো পড়ুন : পানি সঠিকভাবে বিশুদ্ধ করার উপায় জানা আছে কি?
আক্কেল দাঁতের গুরুত্ব
আদিম যুগে মানুষ রান্না ছাড়াই মাংস খেতো। সে সময় খাবার অনেক বেশি চিবাতে হতো বলে তাঁদের চোয়াল ছিল অনেক প্রশস্ত। ফলে আক্কেল দাঁত উঠতে কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু সময়ের সঙ্গে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। খাদ্যতালিকা থেকে বাদ পড়েছে কাঁচা মাংসের মতো অতিরিক্ত শক্ত ও আঁশযুক্ত খাবার। ফলে আক্কেল দাঁতের প্রয়োজনীয়তা কমে এসেছে। এ ছাড়া দাঁত গজানোর পিছনে দায়ী হরমোনে এসেছে পরিবর্তন। তাই অনেকেরই এখন সঠিক সময়ে বা সঠিকভাবে আক্কেল দাঁত গজায় না। আবার আক্কেল দাঁত উঠলে নানা অসুবিধায়ও ভোগেন অনেকে।
অনেকের আক্কেল দাঁত বাঁকা ভাবে গজায়। এতে পাশের মাড়ির দাঁতের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়, ফলে আক্কেল দাঁতে ব্যথা দেখা দেয়। আবার দাঁত পরিষ্কারের সময় আক্কেল দাঁত পর্যন্ত ব্রাশ পৌঁছায় না। তাই, এ দাঁতে ক্যাভিটি জমে দাঁতে ব্যথা, এমন কি ইনফেকশনও হয়। প্রতিবছর শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রায় ১ কোটি আক্কেল দাঁত তুলে ফেলা দেওয়া হয়। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও আমাদের দেশে এর পরিমাণ নেহাত কম নয়।
এস/কেবি
খবরটি শেয়ার করুন