ছবি: সংগৃহীত
দেশের প্রথম ‘যুদ্ধশিশু’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চিঠি পেয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার মেরিনা খাতুন।
রোববার (১৪ই জুলাই) তিনি তাড়াশ উপজেলা পোস্ট অফিস থেকে উপজেলা পোস্ট মাস্টার মো. আইয়ুব আলীর কাছে থেকে তার ঠিকানায় আসা ওই চিঠিটি গ্রহণ করেন।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) উপপরিচালক (উন্নয়ন) প্রথম রঞ্জন ঘটক স্বাক্ষরিত চিঠিতে মেরিনা খাতুনকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৫শে এপ্রিল জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৮৯তম সভায় সিরাজগঞ্জের তাড়াশের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি পাওয়া বীরাঙ্গনা পচি বেওয়ার মেয়ে মেরিনা খাতুনকে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তা মেরিনা খাতুনকে পত্র প্রদানের মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে।
২০২২ সালে ৮ই সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর সদরের উত্তর ওয়াবদা বাঁধ এলাকার মৃত ফাজিল আকন্দের স্ত্রী বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত পচি বেওয়ার মেয়ে মেরিনা খাতুন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়ে মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি আবেদন পাঠান। আবেদনে মেরিনা খাতুন উল্লেখ করেন, ‘তার মা পচি বেওয়াকে মুক্তি যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রীয়ভাবে ২০১৮ সালের ৪ঠা জুলাই বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। যার মুক্তিযোদ্ধা গেজেট নম্বর ২০৫। এরই প্রেক্ষিতে তিনি যুদ্ধশিশু হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান।’
এদিকে যুদ্ধশিশু স্বীকৃতির চিঠি পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মেরিনা খাতুন কেঁদে ফেলেন। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি স্বীকৃতির চিঠি পেয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ। আরও কৃতজ্ঞ স্বীকৃতি পেতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও যে সকল সংবাদ কর্মী আমার পাশে ছিলেন তাদের প্রতি।’
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাড়াশের মৃত ফাজিল আকন্দের বিধবা স্ত্রী পচি বেওয়াকে স্থানীয় কয়েকজন রাজাকার হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দেন। আর সেখানে হানাদার বাহিনীর সেনাদের কাছে পাশবিক নির্যাতন শিকার হন তিনি। এতে করে তিনি সন্তান সম্ভাবা হয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে যুদ্ধশিশু মেরিনা খাতুনের জন্ম হয়।
ওআ/কেবি