শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৬ই আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৮ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোটের বিক্ষোভ ও মশাল মিছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০১:১৯ পূর্বাহ্ন, ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

#

সকল সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট-এর উদ্যোগে শুক্রবার (২০শে সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশব্যাপী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ঘর-বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ধর্ষণ, সীমান্তে হত্যা এবং ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আইন ও প্রশাসনের সম্মুখে উৎসব মন্ডলকে অমানবিকভাবে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা, চট্টগ্রামে গণেশ প্রতিমার উপর হামলা, আদিবাসীদের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং পূর্বঘোষিত আট দফা বাস্তবায়নের দাবিতে ‘তিমিরি বিনাশী অভিযাত্রা’ নামে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস। বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট-এর প্রতিনিধি হিসেবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নির্মল বিশ্বাস। এছাড়াও বাংলাদেশ সনাতন পার্টির (বিএসপি) সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুমন কুমার রায়, প্রদীপ কান্তি দে, সনাতনী অধিকার আন্দোলন ও বাংলাদেশ সচেতন সনাতনী নাগরিক এর প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার, পিজুস দাস, সনাতন অধিকার মঞ্চ’র আহবায়ক অধ্যাপক অশোক তরু, অধ্যাপক চন্দন সরকার, রনি রাজবংশী, তন্ময় মল্লিক, আশিষ বাড়ৈ, এডভোকেট সুশান্ত অধিকারী, সুদিপ্ত প্রমাণিক, সরশীষ চাকমা, নবাংসু চাকমা, অরিন্দন মন্ডল, সজল মন্ডল, সোনামনি কর্মকার, সুমন গোস্বামী, হৃদয় গাইন, বিপুল বর্মন উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে একাত্মতা ঘোষণা করেন বাংলাদেশ হিন্দু পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দিপকংর সিকদার দিপু, সাজন মিস্ত্র, সাজেন বল, সনাতন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহন সরকার, ভক্ত সংঘ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অনিল পাল, বিশ্বহিন্দু ফেডারেশনের সহসভাপতি সাংবাদিক শ্যামল নাগ, বাংলাদেশ হিন্দু লীগের সভাপতি দিপীল দাস গুপ্ত, বাংলাদেশ সনাতন পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনুপ কুমার দত্তসহ অনেকে। 

বক্তারা অতি দ্রুত আট দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সংগঠনের প্রতিনিধি নির্মল বিশ্বাস সারা বাংলাদেশে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতনে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন। অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আর্কষণ করেন। সনাতনী অধিকার আন্দোলনের প্রতিনিধি প্রসেনজিৎ কুমার হালদার বলেন, পূর্বঘোষিত আট দফা দাবি মেনে না নিলে ও পূজাতে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। 

পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনিষা মহন্ত বলেন, রবিবার থেকে সব জেলার জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, ৮ বিভাগীয় প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভা, মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান, বিকাল ৩টায় প্রেসক্লাব থেকে যমুনায় পদযাত্রার মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান, বুধবার রাষ্ট্রপতির নিকট স্মারকলিপি প্রদান, বিকাল ৩টায় প্রেসক্লাব থেকে বঙ্গভবনে পদযাত্রার মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান৷

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পেশকৃত ৮ দফা দাবিসমূহ: 

১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য "নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন" গঠনের মাধ্যমে "দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল" গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান ও ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, ২. অনতিবিলম্বে "সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন" প্রণয়ন করতে হবে, ৩. সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, ৪. সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে। বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে, ৫. "দেবত্তোর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন" প্রণয়ন এবং "অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ" আইন বাস্তবায়নে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, ৬. সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনা কক্ষ বরাদ্দ করতে হবে, ৭. সংস্কৃত পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন করতে হবে, ৮. শারদীয় দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দিতে হবে। পাশাপাশি প্রতিটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রধান প্রধান ধর্মীয় উৎসবে প্রয়োজনীয় ছুটি প্রদান করতে হবে।

আই.কে.জে/

সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট

খবরটি শেয়ার করুন