বুধবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
৩রা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা : ধারা অনুযায়ী যা যা করতে পারবে সেনাবাহিনী *** ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী *** অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না : তারেক রহমান *** ৪৩তম বিসিএস : স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পরই নিয়োগ *** নিহত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আশুলিয়ায় শনিবার থেকে বন্ধ কারখানা চালু *** ঢাকায় একদিনে ট্রাফিক আইনে ১৫২ মামলা, জরিমানা ৭ লাখ টাকা *** সাবেক রেলমন্ত্রীকে রিমান্ডে পাঠানোর পর আদেশ স্থগিত *** কোন স্ট্যাটাসে দিল্লিতে শেখ হাসিনা, জানে না অন্তর্বর্তী সরকার *** বাংলাদেশকে আরও ২ বিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক *** জীবিকা সংকটে শান্তিপ্রিয় খুমিরা || দরকার বিত্তবানদের সহযোগিতা

তিন দশক পর শিশুদের দত্তক দেওয়া বন্ধ করলো চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০২:৪৩ অপরাহ্ন, ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪

#

ছবি: সংগৃহীত

নিজ দেশের শিশুদের বিদেশে দত্তক দেওয়ার কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, চীন এখন থেকে আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের দত্তক দেওয়ার অনুমতি দেবে না। তবে রক্তের সম্পর্কিত আত্মীয় বা সৎ সন্তানকে দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রযোজ্য হবে।

চীনের শিশুদের আন্তর্জাতিকভাবে দত্তক নেওয়ার কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন। ফলে ইতোমধ্যেই আবেদনকারী শত শত পরিবারগুলো অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। নিয়মের এই পরিবর্তন আন্তর্জাতিক চুক্তির চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চীনের একজন মুখপাত্র। গত তিন দশক আগে এক সন্তান নীতি চালু হওয়ার পর অনেকেই সন্তানকে দত্তক হিসেবে দিয়েছিলেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত তিন দশকে অন্তত দেড় লাখ চীনা শিশুকে বিদেশে দত্তক নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৮২ হাজারের বেশি চীনা শিশুকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দত্তক দেওয়া হয়েছে। যা বিশ্বের অন্য যে কোনো জায়গার তুলনায় অনেক বেশি। 

গত ৫ই সেপ্টেম্বর একটি সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, চীন এখন থেকে আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের দত্তক নেওয়ার অনুমতি দেবে না।তবে রক্তের সম্পর্কিত আত্মীয় বা সৎ সন্তানকে দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রযোজ্য হবে। 

মাও এই সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি বলেছেন, এটি প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ছাড়া তিনি চীন থেকে শিশুদের দত্তক নেওয়ার জন্য যেসব পরিবার আকাঙ্ক্ষা করেছেন এবং ভালবাসার দেখিয়েছেন সেই পরিবারগুলোকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

চীনের বিতর্কিত এক-সন্তান নীতি ১৯৭৯ সালে প্রবর্তিত হয়েছিল, যখন দেশটি ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। তখন অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল। যে পরিবারগুলো নিয়ম লঙ্ঘন করত তাদের জরিমানাও করা হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে বাবা-মাকে চাকরি হারতে হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মেয়ে শিশুদের পরিত্যাগ করা হতো।

আরও পড়ুন: সব প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক চায় পাকিস্তান : শেহবাজ

১৯৯০-এর দশকে আন্তর্জাতিকভাবে চীনা শিশুদের দত্তক দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় এবং তখন থেকে কয়েক হাজার শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক দত্তক কার্যক্রম বিভিন্ন সময়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে। 

২০১৩ সালে চীনা পুলিশ ৯২ জন অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করে এবং একটি পাচারকারী নেটওয়ার্কের সন্দেহভাজন সদস্যদের গ্রেফতার করেছিল। সেই সময়ে সমালোচকরা চীনের এক-সন্তান নীতি এবং দত্তক আইনের দিকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, শিশুদের কেনার জন্য একটি সমৃদ্ধ আন্ডারগ্রাউন্ড বাজার তৈরি হয়েছে। বেশ কয়েকটি দেশ তখন আন্তর্জাতিকভাবে চীনা শিশুদের দত্তক দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

কিন্তু বর্তমানে বেইজিং শিশুদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করেছে। তবে দেশটি বর্তমানে শিশু জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। ২০১৬ সালে চীন এক-সন্তান নীতি বাতিল করে এবং ২০২১ সালে বেইজিং আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহিত দম্পতিদের তিন সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য আইন সংশোধন করে।

জন্মহার বাড়ানোর লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনা সরকারও অন্যান্য প্রণোদনার মধ্যে ট্যাক্স বিরতি এবং উন্নত মাতৃস্বাস্থ্য পরিষেবার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু এই নীতিগুলো গ্রহনের পরেও জন্মহার বৃদ্ধি পায়নি। ২০২৩ সালে দেশের মোট জনসংখ্যা ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো হ্রাস পেয়েছে।  

সূত্র : বিবিসি

এসি/কেবি

চীন শিশু দত্তক

খবরটি শেয়ার করুন