সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে ৭ সিদ্ধান্ত

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:০২ অপরাহ্ন, ৭ই মে ২০২৪

#

ফাইল ছবি

নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে শুল্কহার যৌক্তিক করা ও ঋণপত্র খোলায় সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজারের সীমা বাড়ানোসহ ৭ দফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেওয়া এসব সিদ্ধান্ত-সংক্রান্ত একটি চিঠি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডসহ (এনবিআর) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের দেওয়া ওই চিঠিতে গত ৩০শে মার্চ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সূত্র ধরে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকারের কোনো পদক্ষেপই জিনিসপত্রের দাম সহনীয় রাখতে পারছে না। বিশ্ববাজারে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম কমে আগের তিন বছরের স্তরে চলে গেলেও দেশের বাজারে এর প্রতিফলন নেই। উল্টো এখানে শুল্ককর কমানো হয়। তাতেও কাজ হয় না।

সর্বশেষ মূল্যস্ফীতি প্রায় দুই অঙ্কের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইও কয়েক দফা বৈঠক করেছে বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত মাসের শেষের দিকে ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে বাজার সহনীয় করার বিষয়ে আরেক দফা বৈঠক করে।

সেখানে দেশের শীর্ষ গ্রুপ ও আমদানিকারকেরা নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেন। তারা শুল্ককর যৌক্তিক করা, এমনকি নিত্যপণ্যের শুল্ক একেবারে তুলে দেওয়ারও পরামর্শ দেন। আলোচনায় অংশ নিয়ে টিকে গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ অন্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার সীমা বাড়ানো ও শুল্ককর কমানো ও মেয়াদ বাড়ানোর সুপারিশসহ আরও বেশ কিছু পরামর্শ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার সহনীয় করতে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়।

বাণিজ্যসচিবের চিঠিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি বা ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর খাদ্যপণ্যের শুল্ককাঠামো পর্যালোচনা করে কমানোর ক্ষেত্রে এনবিআরকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে সয়াবিন, পাম অয়েলসহ অন্য ভোজ্যতেলের শুল্ককাঠামো যৌক্তিক করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেও এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

আরও পড়ুন: পাড়া-মহল্লা পর্যন্ত টিসিবির দোকান প্রতিষ্ঠা করা হবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসবের বাইরে আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চালের জাতভিত্তিক নামে দাম নির্ধারণ, ভোজ্যতেলের রেয়াতি শুল্কহার বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত করা, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কৃষিপণ্যের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের বিদ্যমান ফর্মুলার প্রয়োজনীয় সংস্কার করা এবং ভারত থেকে টিসিবির মাধ্যমে আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে প্রাথমিকভাবে ঢাকা, গাজীপুর এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় খোলা বাজারে বিক্রি করা।

বাজার বিশ্লেষকেরা জানান, শুধু শুল্কহার কমিয়ে বা তুলে দিয়ে বাজার সহনীয় রাখা যাবে না। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে নজরদারি বাড়িয়ে কারা কত আমদানি করছে, কী দামে আমদানি করেছে, খরচসহ প্রতিটি পণ্যের কত দাম হওয়া উচিত, এসব বিষয়ের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করেই বাজারকে সহনীয় রাখার চেষ্টা করতে হবে। না হলে শুধু ব্যবসায়ীদের কথার ওপর বাজার ছেড়ে দিলে জিনিসপত্রের দাম কখনোই সহনীয় হবে না।

এসকে/ 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিত্যপণ্যের দাম

খবরটি শেয়ার করুন