বুধবার, ২৩শে জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৮ই শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ১০ হাজার হিন্দু পরিবারকে জমি দিচ্ছেন যোগী আদিত্যনাথ *** জেমসের কনসার্টের আয়ের অংশ দেওয়া হবে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের *** অতি দ্রুত নির্বাচনই উত্তরণের পথ: মির্জা ফখরুল *** আরও ১৩টি দল ও জোটের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধান উপদেষ্টা *** ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রস্তুত ইরান, পরমাণু কর্মসূচি চলবে: পেজেশকিয়ান *** নির্বাচন কমিশন গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে একমত হয়েছে সবাই: আলী রীয়াজ *** পাকিস্তানকে কাঁপিয়ে সেরা দশে মোস্তাফিজ *** মৃতের সংখ্যা নিয়ে গুজব: গণমাধ্যম তদন্ত করলে সহযোগিতা করবে আইএসপিআর *** এশিয়ার সেরা নির্মাতার পুরস্কার পাচ্ছেন ইরানি পরিচালক জাফর পানাহি *** স্বেচ্ছায় পদত্যাগের অভিপ্রায় নেই, নিয়োগকর্তা বললে চলে যাব: শিক্ষা উপদেষ্টা

গম আমদানি : ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তিতে বাধা হবে না তো রাশিয়া?

নিজস্ব প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৪:০৮ অপরাহ্ন, ২৯শে এপ্রিল ২০২৩

#

ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর দেশ দুটি থেকে গম আমদানি প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে গিয়েছিল। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শস্যচুক্তির কল্যাণে গত বছরের শেষে ইউক্রেন থেকে গম আমদানি শুরু হয়। আমদানি শুরুর ছয় মাসের মাথায় গম আমদানিতে আবারও শীর্ষস্থানে উঠে এসেছে ইউক্রেন।

আবার ঋণপত্রের জটিলতাসহ নানা কারণে রাশিয়া থেকে গম আমদানিতে ভাটা পড়েছিল। ইউক্রেন থেকে নিরাপদে শস্য রপ্তানির চুক্তিতে রাশিয়াকে রাজি করানোর জন্য রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানিতে সহযোগিতায় জাতিসংঘ চুক্তি করে। তারপর রাশিয়া থেকেও গম আমদানি বাড়ছে দেশে।

মূলত জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় দুটি চুক্তির কারণে দেশ দুটি থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও খাদ্যশস্য বিশেষ করে গম আমদানি বাড়ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। এর ফলে আটা তৈরির গম আমদানি নিয়ে যে সংকটের শঙ্কা জেগেছিল, তা কিছুটা কেটেছে।

আমদানিকারকেরা বলছেন, ভারতের গম রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের গম আমদানির প্রধান দুই উৎস হয়ে উঠেছে যুদ্ধরত দেশ দুটি। রাশিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী, ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানির চুক্তির মেয়াদ আগামী মাসের মাঝামাঝি শেষ হবে। নতুন করে চুক্তি আবারও নবায়ন হলে দেশে গমের সরবরাহ নিয়ে শঙ্কা থাকবে না। তবে চুক্তি নবায়ন না হলে আবার দুশ্চিন্তায় পড়তে হবে।

আগামী মাসে শস্যচুক্তিতে রাশিয়া সম্মত হয়, তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু রাশিয়া রাজি না হলে আমদানি নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হবে।

গম আমদানিকারক বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, শস্যচুক্তির কারণে ইউক্রেন থেকে গম আমদানি করা গেছে। তাতে বাংলাদেশে গমের সরবরাহে সংকট হয়নি। এখন যদি আগামী মাসে শস্যচুক্তিতে রাশিয়া সম্মত হয়, তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু রাশিয়া রাজি না হলে আমদানি নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হবে। কারণ, নরম গমের বড় উৎস ইউক্রেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য গম। দেশে বছরে গম উৎপাদন হয় ১১ লাখ টন। গত বছর বাদ দিলে স্বাভাবিক সময়ে দেশে গড়ে গম আমদানি হয়েছে ৬৬ লাখ টন। দেশের মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ভাতের পরই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় গমের তৈরি উপকরণ। এ কারণে গমের সরবরাহে ব্যাঘাত হলে বা দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়ে।

গমে শীর্ষে ইউক্রেন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১৬ লাখ ৮১ হাজার টন গম আমদানি হয়েছে। এই আমদানির ৩৩ শতাংশ বা সাড়ে ৫ লাখ টন এসেছে ইউক্রেন থেকে, যা একক উৎস দেশ হিসেবে শীর্ষে। একই সময়ে রাশিয়া থেকে আমদানি হয়েছে ২৭ শতাংশ বা সাড়ে ৪ লাখ টন গম। অর্থাৎ দেশ দুটি থেকে আমদানি হয়েছে ৬০ শতাংশ গম।

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, আটা তৈরির গম আসছে আরও দুটি দেশ থেকে। এর মধ্যে ব্রাজিল থেকে ১ লাখ ৭ হাজার টন এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ৪৫ হাজার টন আমদানি হয়েছে। কানাডা থেকে ময়দা তৈরির গম আমদানি হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার টন, যা মোট আমদানির ৩১ শতাংশ।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার হামলা শুরুর পর ইউক্রেন থেকে শস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। তখন বিশ্ববাজারে খাদ্যশস্যের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এতে দেশে দেশে খাদ্যসংকট তৈরির শঙ্কা দেখা দেওয়ায় সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ। গত বছরের ২২ জুলাই জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ নামের শস্য চুক্তি হয়।

ইউক্রেনের তিনটি বন্দর দিয়ে নিরাপদে শস্য রপ্তানিতে দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি এরই মধ্যে দুই দফা নবায়ন করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৮ মার্চ চুক্তি নবায়ন হয়। তখন আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চুক্তির মেয়াদ কমপক্ষে ৬০ দিন বেড়েছে। তবে ইউক্রেন বলেছে, ১২০ দিনের জন্য চুক্তিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

অন্যদিকে কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য রপ্তানির জন্য ইউক্রেনকে সুযোগ দিতে রাশিয়াকে রাজি করাতে গত বছরের জুলাইয়ে আরও একটি তিন বছর মেয়াদি চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় রাশিয়াকে খাদ্য ও সার রপ্তানিতে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে জাতিসংঘ। এরপর রাশিয়া থেকেও খাদ্যশস্য রপ্তানি বাড়তে থাকে।

আরো পড়ুন: ঈদে ৫ দিনে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চুক্তি কার্যকরের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৪৫টি দেশ ইউক্রেন থেকে ২ কোটি ৮৯ লাখ টন শস্য আমদানি করেছে। চুক্তির আওতায় শস্য আমদানিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখন পর্যন্ত সপ্তম।

চুক্তির আওতায় মোট শস্য রপ্তানির মধ্যে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত গম রপ্তানি করেছে ৭৯ লাখ টন। এর মধ্যে গম আমদানিতে স্পেন ও তুরস্কের পরের অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ইউক্রেনের মোট গম রপ্তানির ১১ শতাংশ এসেছে বাংলাদেশে।
এসি/ আই. কে. জে/

চুক্তি নবায়ন

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন