সোমবার, ১লা জুলাই ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
১৭ই আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অনলাইন খাবার ডেলিভারি বয় গভীর রাতে দেখালেন মানবিকতা

নিউজ ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ১১:০২ অপরাহ্ন, ২৭শে নভেম্বর ২০২৩

#

ছবি-সংগৃহীত

অনলাইন খাবার ডেলিভারি সংস্থায় সামান্য বেতনে চাকরি করেন তিনি। কিন্তু তার মানবিকতার কথা শুনলে চোখে পানি আসবে। তমাল সাহা নামে ভারতের এক যুবক সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একজন ডেলিভারি বয়ের এমন মানবিকতার গল্প তুলে ধরেছেন। হায়দরাবাদে ডেলিভারি বয়ের ব্যবহার মন কেড়েছে তার।

অনলাইন খাবার সরবরাহকারী সংস্থার ডেলিভারি বয়দের নিয়ে হাজারও অভিযোগ থাকে। একটু আসতে দেরি হলেও রেগেমেগে তাদের নামে কমপ্লেন করেন বহু গ্রাহক। খাবার ঠান্ডা হয়ে গেলেও সেই ঝাল মেটান খাবার সরবরাহকারীর উপর দিয়েই। অনেক সময় আবার গ্রাহকের ভুলের দায় নিতে চান না ডেলিভারি বয়। লোকেশন ভুল বা অন্য কোনও ভুল হলে তারাও ফিরে যান। তবে এই কাহিনি অন্য সবকিছুর থেকে আলাদা।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার বাংলা সংস্করণ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অনলাইন খাবার সরবরাহকারী সংস্থায় চাকরি করেন যুবক। তখন নিঝুম রাত। দোকান পাট বন্ধ হয়ে গেছে। সেই রাতেই ১২ কিলোমিটার রাস্তা অতিরিক্ত বাইক চালিয়ে গ্রাহকের দোরগোরায় খাবার পৌঁছে দিলেন এক সুইগি ডেলিভারি বয়। না, মুখে তার কোনও বিরক্তির ছাপ নেই। বরং তার কথায়, 'কাউকে ক্ষুধার্থ রাখা মানবিকতা নয়'।

গ্রাহকের ভুল কিন্তু তিনি হাসিমুখে মেনে নিয়েছেন। এতে তার বিন্দুমাত্র অভিযোগ নেই। গ্রাহকের নাম তমাল সাহা। থাকেন হায়দরাবাদে। কিছুদিন হল সেখানে থাকা শুরু করেছেন। এখনও সবকিছু চেনা হয়ে ওঠা হয়নি। 

সুইগির মাধ্যমে খাবার অর্ডার করে ছিলেন। এদিকে ঠিকানার জায়গায় যে ভুল করে ফেলেছেন তা খেয়াল ছিল না। ভুল ভাঙল ডেলিভারি বয়ের ফোনে।

জানতে পারলেন তিনি যে ঠিকানা দিয়েছেন তা তার লোকেশন নয়। লোকেশন থেকে অনেকটা দূরের ঠিকানা দিয়ে ফেলেছেন তিনি। এদিকে তখন রাতও হয়ে গেছে অনেকটা। বাড়িতে খাবারের তেমন কিছু নেই। তমাল ভাবলেন আর বোধ হয় রাতে খাবার জুটবে না। ডেলিভারি বয়কে তিনি শুধু বলেছিলেন যে, সকাল থেকে কিছু খাননি।

এর কিছুক্ষণ পরে তমাল শাহর দরজায় হাজির হন ডেলিভারি বয়। রাত তখন তিনটা বাজে। গ্রাহকের ভুলে ফিরে যেতেই পারতেন ওই ডেলিভারি বয়। কিন্তু তিনি সেটি করেননি। বরং অতিরিক্ত ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি তমালের কাছে খাবার পৌঁছে দিয়েছেন। 

রাত ৩টার সময় অতিরিক্ত ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে খাবার পৌঁছে দেবেন, এটি প্রত্যাশা করেননি তমাল। নিঝুম রাতে দোরগোরায় হাসিমুখে ডেলিভারি বয়কে দেখে অবাক হন তিনি। এ সময় ডেলিভারি বয় একটাই কথা বলে উঠলেন, 'আপনি সারাদিন কিছু খাননি। কাউকে ক্ষুধার্থ রাখা মানবিকতার পরিচয় নয়। তাই এত রাত হলেও এলাম।'

আরো পড়ুন: চায়ের দোকানে এআইর ব্যবহার!

ডেলিভারি বয়ের এমন আচরণ সত্যি মুগ্ধ করেছে তমালকে। সেকথা তিনি শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। লিখেছেন, ওই ডেলিভারি বয়ের নাম মুহাম্মদ আজম। হৃদয় জিতে নিয়েছেন তিনি। এই স্মৃতির কথা আজীবন তার মনে থেকে যাবে। 

সবশেষে 'শুভরাত্রি' বলার সময় তমাল মুহাম্মদ আজমকে জিজ্ঞেস করেন তিনি কখন খাবেন? উত্তরে মুহাম্মদ জানান, বাড়ি ফিরে তারপর খাবেন। একসঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়ার কথাও বলেন তমাল। তবে হাসিমুখে সে অফার ফিরিয়ে দিয়ে মুহাম্মদ আজম বলেন, 'না না আমি বাড়ি গিয়েই খাব। আপনি শুধু আমার জন্য দোয়া করবেন।'

এসি/ আই.কে.জে/




ডেলিভারি বয়

খবরটি শেয়ার করুন