ছবি: সংগৃহীত
কয়েক শতাব্দি ধরে ভ্যাটিকানে রোমান ক্যাথলিক গির্জার নেতা নির্বাচনে বিশেষ বৈঠক আয়োজন করা হয়ে থাকে। এখানে কার্ডিনালদের মধ্যে একান্তে অনুষ্ঠিত সভায় ভোটাভুটির মধ্য দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। সাধারণত দায়িত্বরত পোপ মারা গেলে কিংবা পদত্যাগ করার কয়েকদিন পর এ সম্মেলন হয়ে থাকে। খবর সিএনএনের।
রোমান ক্যাথলিকদের জন্য নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য ভোটাভুটির সময় হলে বিভিন্ন দেশের ৮০ বছরের কম বয়সী কার্ডিনালরা রোমে যান। তারা পৌঁছানোর পর সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকা গির্জায় সকালবেলা বিশেষ একটি ধর্মীয় সমাবেশ হয়। আর বিকেলে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে তারা পায়ে হেঁটে সিস্টিন চ্যাপেলের (কনক্লেভ নামে পরিচিত) দিকে যান।
পোপ ফ্রান্সিসের যোগ্য উত্তরসূরি কে হতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো উত্তরসূরি নির্বাচন করা হয়নি। জ্যেষ্ঠ ক্যাথলিক যাজকদের নিয়ে গঠিত কার্ডিনালদের ‘কলেজ’ পরবর্তী পোপ নির্বাচন করবে। তাদের বেশিরভাগকেই পোপ ফ্রান্সিস নিজে নিযুক্ত করেছেন।
বিগত এক শতকের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরবর্তী পোপ আফ্রিকা বা এশিয়া থেকে আসতে পারেন। আফ্রিকার যে কার্ডিনালদের নাম আলোচনায় আছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন- ঘানার পিটার টার্কসন, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের ফ্রিডোলিন অ্যাম্বোঙ্গো। এ ছাড়া আরেক শক্তিশালী প্রার্থী হলেন—ফিলিপাইনের কার্ডিনাল লুইস তাগলে।
আলোচনায় আছেন—কার্ডিনাল পিয়েত্রো পারোলিন। তার শীর্ষ কূটনৈতিক ভূমিকার কারণে সব কার্ডিনাল তাকে ভালোভাবে চেনেন। অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ইতালির মাত্তেও জুপ্পি, মাল্টার জেনারেল মারিও গ্রেচ।
ঐতিহ্য অনুসারে কোনো পোপের মৃত্যু হলে পরবর্তী পোপ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সময়কালকে ‘সেদে ভ্যাকান্তে’ বা ‘শূন্য আসন’ সময়কাল বলা হয়। এ সময় একজন জ্যেষ্ঠ কার্ডিনাল ‘ক্যামারলেঙ্গো’ নামে পরিচিত হন। তিনি পোপের মৃত্যু নিশ্চিত করেন এবং সাময়িকভাবে ভ্যাটিকানের অর্থ ও প্রশাসনিক দায়িত্ব নেন। তবে চার্চের নীতি পরিবর্তন বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার থাকে না।
সিস্টিন চ্যাপেলের ভেতর অবস্থানকারী প্রত্যেক কার্ডিনালের হাতে দেওয়া কাগজের ব্যালটগুলোয় লাতিন ভাষায় লেখা থাকে- 'এলিগো ইন সুম্মুন পন্তিফিসেম’। এর অর্থ হলো- ‘আমি সর্বোচ্চ পোপ হিসেবে নির্বাচিত’। নিজের নামের পরিবর্তে লেখাটির নিচে কার্ডিনালরা পরবর্তী পোপ হিসেবে তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম লিখে থাকেন।
কার্ডিনালরা ভোট দেওয়ার পর প্রত্যেকে তাদের জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী একে একে ভাঁজ করা ব্যালট নিয়ে একটি বেদির দিকে এগিয়ে যান এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যালটটি একটি পাত্রে রাখেন। এরপর ভোট গণনা শেষে প্রাপ্ত ফল কার্ডিনালদের পড়ে শোনানো হয়। ভোটাভুটিতে কোনো কার্ডিনাল দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেলে তিনি নতুন পোপ নির্বাচিত হন।
আরএইচ/এইচ.এস
খবরটি শেয়ার করুন