ছবি: সংগৃহীত
ভাষার সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। মুসলিম হলেই উর্দুভাষী হবে এ ধারণা বৈচিত্র্যময় ঐক্য ও বাস্তবতা থেকে করুণ বিচ্যুতি ছাড়া আর কিছু নয়। ভারতের মহারাষ্ট্রের এক পৌরসভার সাইনবোর্ড থেকে উর্দু সরিয়ে দেওয়ার আবেদন নাকচ করে সুপ্রিম কোর্ট এ মন্তব্য করেছেন। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
মহারাষ্ট্রের এক পৌরসভার বিভিন্ন সাইনবোর্ড থেকে উর্দু সরিয়ে পৌরসভার কাজকর্মে শুধু মারাঠি ভাষায় পরিচালনার দাবি জানিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের আকোলা জেলার পাতুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বর্ষাতাই সঞ্জয় বাগাড়ে।
এর আগে বর্ষাতাই বাগাড়ের এমন আবেদন পৌরসভা খারিজ করে দিয়েছিল। এ ছাড়া তিনি মুম্বাই হাইকোর্টেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। এরপর তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। গতকাল মঙ্গলবার (১৫ই এপ্রিল) ভারতের সুপ্রিম কোর্টও তার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন আবেদন খারিজ করে বলেছেন, ‘কোনো ভাষাই বিশেষ কোনো ধর্মের নয়। ভাষা ধর্মের প্রতিনিধিত্বও করে না। ভাষা সংস্কৃতির অঙ্গ। ধর্মের মাধ্যমে নয় বরং সম্প্রদায়, অঞ্চল ও আঞ্চলিক মানুষজনের পরিচয় পাওয়া যায় ভাষার মধ্য দিয়ে।’
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, পৌরসভা তার কাজকর্ম ও সাইনবোর্ডে উর্দু ভাষা ব্যবহার করেছে। কারণ, ওই এলাকায় বহু উর্দুভাষীর বসবাস। পৌরসভার কাজকর্ম সম্পর্কে অবহিত করার জন্যই মারাঠির পাশাপাশি উর্দু ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে যোগাযোগ সহজতর হয়।
উর্দু ভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে বিচারপতিরা বলেছেন, হিন্দি ও মারাঠির মতো উর্দুও ভারতীয়-আর্য ভাষা। এ দেশের জল-হাওয়াতেই উর্দুর জন্ম। এ ছাড়া বিচারালয়ের কাজকর্মেও উর্দুর ব্যবহার প্রবল। আদালত, হলফনামা, পেশি, দাস্তি কিংবা ওকালতনামার মতো শব্দগুলো উর্দু। ফৌজদারি বা দেওয়ানি যেকোনো মামলায় অজস্র উর্দুর ব্যবহার নিত্য হচ্ছে।
গতকাল মামলার রায়ে বিচারপতিরা আরও বলেন, আমাদের শক্তি কখনো আমাদের দুর্বলতা নয়। আসুন, উর্দুসহ সব ভাষার সঙ্গেই বন্ধুত্ব করি।
আরএইচ/এইচ.এস