ছবি: সংগৃহীত
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাককানইবি) স্থাপিত ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হওয়া এ ভাস্কর্য কবির একটি গানের নামানুসারে তৈরি হয় এবং এটি স্থাপন করা হয় বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ এবং পুরোনো কলা অনুষদ ভবনের মাঝখানের পুকুরপাড়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে চার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ পুকুরগুলোর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে নির্মিত হয় ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্যটি।
গত ৫ই আগস্ট প্রশাসনিক পটপরিবর্তনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা ভাস্কর্যটির দুটি হাতের আঙুল ভেঙে দেয়। এরপর থেকে প্রশাসনিকভাবে এটি ভেঙে ফেলার দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে নতুন প্রশাসন গতকাল মঙ্গলবার (১৭ই জুন) ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করে।
জানা গেছে, প্রতিহিংসার জেরে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরের নির্দেশে সবুজ গাছপালায় ঘেরা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত একটি ঘর ভেঙে সেখানে নির্মাণ করা হয় ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য। আগের পরিকল্পনা পরিবর্তন করে তৎকালীন উপাচার্য নিজে পরিকল্পনা করে এটি নির্মাণ করেন।
৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সৌমিত্র শেখরের পদত্যাগের পর থেকে ভাস্কর্যটির বিরোধিতা করে আসছিলেন অনেকে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিবাদের মুখে ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
পরিকল্পনা দপ্তরের পরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘অঞ্জলি লহ মোর ভাস্কর্যটি শিক্ষার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভাঙা হয়েছে। এ ছাড়া তৎকালীন উপাচার্যের সময় এ পুকুরে একটি ভাসমান ঘর ছিল, যা ড্রাম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। পরে ড্রামগুলো ফুটো হয়ে যাওয়ায় এবং পুকুর সংস্কারের জন্য ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়।’
উল্লেখ্য, দেশের প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী, নৃত্যপরিচালক, নৃত্য প্রশিক্ষক ও অভিনেত্রী মুনমুন আহমেদের হাতের ছবি থেকে ম্যুরালটি তৈরি করেছিলেন ভাস্কর্যবিদ মনিন্দ্র পাল। মুনমুন আহমেদ নিজেই বিষয়টি জানিয়েছেন এক ফেসবুক পোস্টে। একজন নারী দু’হাত সংযুক্ত করে অঞ্জলি দিচ্ছেন, ম্যুরালটি সেই ভাবনা বহন করত।
খবরটি শেয়ার করুন