ছবি: সংগৃহীত
আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর পথ খোঁজা হচ্ছে। টেলিফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্লুমবার্গকে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা ঘাটতি কমানোর সুযোগগুলো সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখছি।’ খবর ব্লুমবার্গের।
আমেরিকার পক্ষ থেকে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি শিল্পে বড় ধরনের আঘাত আসতে পারে। এ ধাক্কা সামলাতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে জানিয়েছেন, আমেরিকা থেকে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ধার্য হওয়া শুল্ক কমাতে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমানোর উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ। ট্রাম্প প্রশাসন যে কয়েকটি দেশের ওপর সর্বোচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এ পদক্ষেপ বস্ত্র রপ্তানির ওপর নির্ভরশীল দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ঝাঁকুনি দিতে পারে।
আমেরিকায় বাংলাদেশের মোট রপ্তানির প্রায় ৯০ শতাংশই তৈরি পোশাক। একক দেশ হিসেবে আমেরিকায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পোশাক ক্রেতা। ফলে এই শিল্পের ওপর আঘাত লাগলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। গত বছর ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর রাজনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে দেশ।
শুল্কের প্রভাব মূল্যায়ন করতে বাংলাদেশ সরকার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোসহ মূল অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আমেরিকা থেকে তুলাসহ অন্যান্য পণ্য আমদানি বাড়ানো।
মুম্বাইয়ে ব্লুমবার্গ ইকোনমিকসের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক অর্থনীতিবিদ অঙ্কুর শুক্লা মনে করেন, এই শুল্কের কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য আইএমএফ নির্ধারিত ঋণ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। তিনি লিখেছেন, ‘এটি এই দেশগুলোতে তহবিলের ঋণকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে, যা প্রবৃদ্ধির নিম্নমুখী ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেবে।’
তবে, বাংলাদেশের জন্য কিছুটা ইতিবাচক দিকও রয়েছে। পোশাক খাতে দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী শ্রীলঙ্কা (৪৪ শতাংশ) এবং ভিয়েতনামের (৪৬ শতাংশ) তুলনায় বাংলাদেশের শুল্কের হার কম (৩৭ শতাংশ)।
কর্মকর্তারা আরও বলছেন, পারস্পরিক বাণিজ্য আলোচনার অংশ হিসেবে শুল্ক সমন্বয়ের সুযোগ থাকতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বশির উদ্দিনের মতে, আমেরিকার এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে ‘মেঘ জমেছে’। তিনি আরও বলেন, ‘এটি আর দ্বিপক্ষীয় বিষয় নয়, এটি একটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সুনামি হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
আরএইচ/