ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ইতিহাসের 'সবচেয়ে বেশি টানাপোড়েনের' মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে দেখা দেওয়া এ চ্যালেঞ্জের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে দুই নিকট প্রতিবেশী দেশ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছে দুই দেশ।
সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশ আর ভারতের শীর্ষ নেতারা দুই দেশের জনগণের স্বার্থে কূটনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরাও আশাবাদী। ভারতীয় পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ রবিন্দর সাচদেবও দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে আশাবাদের কথা শুনিয়েছেন। সুখবর ডটকম-এর পাঠকদের জন্য তার বক্তব্য তুলে ধরা হলো-
পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক বিশেষজ্ঞ রবিন্দর সাচদেব বলেছেন, পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আরও পারদর্শী হয়ে উঠছে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে স্থিতিশীলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তার মতে, দুই দেশের স্বার্থেই সম্পর্ক জোরদার করা ও অর্থনৈতিক আদান-প্রদান বাড়ানো উচিত। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রবিন্দর সাচদেব এসব কথা বলেন।
এনআইকে রবিন্দর সাচদেব বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে স্থিতিশীলতার লক্ষণ দেখাচ্ছে। ঢাকার ‘স্বার্থেই’ নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা এবং অর্থনৈতিক আদান-প্রদান বাড়ানো উচিত।
সাচদেব বলেন, ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আবারও স্থিতিশীল হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং বাংলাদেশও সম্ভবত আরও পারদর্শী হয়ে উঠছে।’ এ স্থিতিশীলতার পেছনে ভারতের ভারসাম্যপূর্ণ নীতিকে মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি। সাচদেব বলেন, ‘ভারত ভারসাম্যপূর্ণ ও অনুমানযোগ্য খেলোয়াড়। আমাদের নীতি পেন্ডুলামের মতো দোলাচলে থাকে না।’
এ পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা এবং অর্থনৈতিক আদান-প্রদান বাড়ানো উচিত। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা এবং ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক আদান-প্রদান বাড়ানো জরুরি। ভারত এর জন্য প্রস্তুত।’
এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে সাচদেব বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক বিষয়ে আলোচনা হওয়া উচিত, যার মধ্যে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতাও অন্তর্ভুক্ত।’
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জ্যাসওয়াল বাংলাদেশের সঙ্গে ‘ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক’ গড়তে ভারতের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন এবং প্রতিবেশী দেশে একটি গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকারের গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তার মন্তব্যের পরপরই সাচদেব এ অবস্থান ব্যক্ত করলেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে রণধীর জ্যাসওয়াল বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। আমরা একটি গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের পক্ষে আছি।’
গত আগস্টে বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। এরপর দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ক্ষুদ্রঋণে তার কাজের জন্য তিনি বহুল প্রশংসিত। সংস্কার ও ঐক্যের জন্য তার প্রতি উচ্চাশা আছে।
এইচ.এস/
খবরটি শেয়ার করুন