ছবি: সংগৃহীত
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের শরণার্থীশিবিরে বাংলাদেশের অন্তত সাড়ে ছয় লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ভারতের ১৭টি শরণার্থীশিবির থেকে পাওয়া হিসাবে ‘লিনিয়ার রিগ্রেশন ফর্মুলা’ (আনুপাতিক হার) ব্যবহার করে এই সংখ্যা বের করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আয়োজিত ‘একাত্তরের শরণার্থীশিবিরে মৃত্যু’ শীর্ষক বিশেষ বক্তৃতায় উঠে আসে এসব তথ্য।
গতকাল বুধবার (১০ই সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সেমিনার হলে এই বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়। আমেরিকা-প্রবাসী গবেষক নাজমুল ইসলাম তার এক যুগ ধরে করা গবেষণাপত্রের মূল অংশ পাঠ করেন। তিনি বলেন, অনেক মানুষ আশ্রয়শিবিরে যাওয়ার সময় পথে মারা গেছেন। সেসব সংখ্যা পাওয়া যায়নি।
ভারতে ১৭টি শরণার্থীশিবির থেকে নাজমুল ইসলাম গবেষণার তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, এসব তথ্য সেখানকার নিবন্ধন খাতায় লিপিবদ্ধ করা আছে। কিছু তথ্য সরকারি হিসাবে পাওয়া গেছে। সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় ছিল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার সল্টলেকের শরণার্থীশিবিরটি। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে মারা যান ৩ হাজার ৭৬১ জন শরণার্থী। এখানে থাকা ১ লাখ ৭০ হাজার শরণার্থীর মধ্যে এই হিসাব রাখা হয়।
এই গবেষক জানান, পশ্চিমা দেশে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাণহানি নিয়ে যতটা আলোচনা হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। সেখানে এমন একটি গবেষণামূলকভাবে প্রমাণিত মৃত্যুর সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ও গবেষক মফিদুল হক বলেন, গণহত্যার স্বীকৃতি পেতে শরণার্থীশিবিরের মৃত্যুর এই হিসাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এই পরিসংখ্যানের সঙ্গে দেশের ভেতরে ‘ননভায়োলেন্ট’ মৃত্যুর সংখ্যা যুক্ত করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জে.এস/
খবরটি শেয়ার করুন