মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৬ই বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** ২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না *** ‘বিএসসিপিএলসি আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইডথ পরিবহনে মাইলফলক অতিক্রম করেছে’ *** ‘পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের মতো গাজাও ফিলিস্তিনের অংশ’ *** ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে এখনো আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব *** আগামীকাল শেষ হচ্ছে মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা *** ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর শিরোপা জয় *** মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনে জনবল নিয়োগ *** স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর কারিগরি শিক্ষা হবে মূল বিষয়: ড. দেবপ্রিয় *** বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ–বাণিজ্য, বন্ধে প্রয়োজন কঠোর পদক্ষেপ *** হজযাত্রীদের জন্য ‘লাব্বাইক’ অ্যাপ উদ্বোধন করলেন ড. ইউনূস

বৈরী বসন্তের কবিতা

সাহিত্য ডেস্ক

🕒 প্রকাশ: ০৪:১০ অপরাহ্ন, ২৮শে এপ্রিল ২০২৫

#

মাহবুব কামাল। ছবি: সংগৃহীত

মাহবুব কামাল

এক নিঃশব্দ অথচ পারমাণবিক 

ভাঙনের খেলা খেলে 

মুহূর্তেই ছেড়ে গেছে আমাকে জনৈকা। 

তার আসল নামটা দেবো না

তাকে ডেকেছি আমি ‘দীপিকা’

না, এই দীপিকা প্রদীপ নয়

এ এক রাগিণীর নাম। 

কোনো এক ঝিলিমিলি বসন্তে

এসেছিলো সে

আর এই বৈরী বসন্তে 

চোখে-মুখে না ফেরার প্রতিজ্ঞা দেখিয়ে 

চলে গেছে হায়!

হ্যাঁ, সেদিন ছিল পহেলা ফাল্গুন

নীলক্ষেতের চৌমাথায় দাঁড়িয়ে দেখি

সেখান থেকে ইডেন কলেজের দিকে

চলে গেছে যে রাস্তা

সেখানেই হলুদ শাড়ি পরা এক যৌবনবতীর 

পথ আটকে দাঁড়িয়েছে এক ক্রুদ্ধ  যুবক। 

না, নারীকে বিপদগ্রস্ত দেখলেই

পুরুষের দেহমনে সঞ্চার হয় 

যেমন বীররস

আমি তেমন বীর সাজতে চাইনি।

তবে কী এক দুর্বোধ্য প্রহেলিকায় 

এক অপ্রতিরোধ্য সাহসে 

দৌড়ে গিয়ে তাকে আগলে ধরেছিলাম। 

সেই থেকে হয়ে গেল সে আমার

এ এমন হওয়া, একদিন বলেছিলাম

তুমি এমনভাবে সেজে থাকবে

সবাই তোমাকে পেতে চাইবে

কিন্তু আমি ছাড়া কেউ পাবে না।

উত্তরে বলেছিলো

তুমি আমার নাম রেখেছো

আমিও তোমার নাম রাখলাম ‘সাহস’

যাও, কেউ আর পাবে না আমাকে।

কী সরল সুন্দর ছিল সে!

ঘুঙুর নেই, অথচ

চরণে বাজতো নূপুরের ধ্বনি।

কিন্তু বসন্ত কি সাংবাৎসরিক

সুবাস ছড়ানো এক সময়?

প্রশ্নটা এজন্যই যে, 

এই সেদিন গেল পহেলা ফাল্গুনেই

তবে কেন প্রিয় এই ঋতু 

হয়ে ওঠে স্বৈরিণী।

শাড়িটাই ছিল শুধু তার হলুদ

বাকিটা নিরাভরণ, একটা টিপ ছিল অবশ্য

এক গহন কাননের নিরালায়

বসে আছি দু’জন

হঠাৎ এক শ্মশ্রুমণ্ডিত বৃদ্ধ

গজরাতে গজরাতে সামনে এসেই

হুকুম ছাড়ে, মাথায় কাপড় দ্যান!

বসন্তের দিনে গ্রীষ্মের খররোদ্দুরের মতো

খড়খড়ে তার গলা।

সেটা ছিল গোধূলিলগ্ন

মাগরিবের আজানের সময়

বাকি আছে অনেকটাই। 

আজানের সুর শুনলে 

তাকে বলতে হয় না,

স্বয়ংক্রিয় শাড়ির আঁচল

উঠে যায় খোঁপায় আবদ্ধ

দীঘল চুলে। 

কিন্তু এখন, এই মুহূর্তে

জবরদস্তির কাছে হার মানে না সে

অলঙ্ঘনীয় কণ্ঠে বলে

আজান পড়ুক, দেবো।

দীপিকার গাঢ় জমাট উচ্চারণে

থেমে যায় বটে বৃদ্ধ

তবে যাওয়ার আগে 

একটা গালি দিয়ে যায়

যার একটাই অর্থ, নষ্টা!

বৃদ্ধের প্রস্থান শেষে

চোখ পড়েছে চোখের পরে

ভাষাহীন সেই দৃষ্টির 

অনুবাদ করতে গিয়ে 

ভড়কে যাই আমি।

এমনও চাহনি থাকে

কোনো মায়াবী রমণীর!

আমি পড়ে ফেলি তার চোখ।

ওই গালির বিরুদ্ধে 

শক্ত বিবাদী হইনি আমি

আর তাই তার অযোগ্য হয়ে পড়েছি। 

এরপর দুমদাম পায়ে

একটি শব্দও মুখে না তুলে 

চলে যায় সে। 

আগেই বলেছি, তার চোখেমুখে ছিল

আর না ফেরার প্রতিজ্ঞা!

আরএইচ/এইচ.এস

কবিতা মাহবুব কামাল

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন