শুক্রবার, ৪ঠা জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১৯শে আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ

*** আসাদের ঘনিষ্ঠদের যেভাবে ধরা হচ্ছে সিরিয়ায় *** সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাবে মালয়েশিয়া: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা *** এনবিআরের কমিশনারসহ ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু *** গুপ্তচর সন্দেহে বিপুলসংখ্যক আফগানকে দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে ইরান *** ডেঙ্গু শনাক্তে ১৯ হাজার কম্বো কিট দিল চীন *** বিশ্বকাপে চোখ রেখে এশিয়ান কাপে খেলবে বাংলাদেশ *** সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ সংশোধন প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন *** মোটর ও ইলেক্ট্রনিকস খাতে যৌথ উদ্যোগ চান বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ব্যবসায়ীরা *** আইজিপির সঙ্গে ইউনেসকো প্রতিনিধির সাক্ষাৎ *** সাগরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, সপ্তাহজুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টির পূর্বাভাস

সফল এক কৃষি উদ্যোক্তার গল্প

বিশেষ প্রতিবেদক

🕒 প্রকাশ: ০৫:৫৯ অপরাহ্ন, ২৮শে এপ্রিল ২০২৫

#

ছবি: ফেসবুক থেকে

মাহবুব রহমান

নিজের চারপাশের জগৎকে আরও একটু ভালোভাবে দেখা, কৌতূহলী মন নিয়ে চারদিকে অনুসন্ধিৎসু চোখ মেলে রাখা, এভাবে যেটা হয়, হঠাৎ হঠাৎ চমৎকার সব দৃশ্য নতুনভাবে আবিষ্কার করার আনন্দে মন প্রফুল্ল হয়ে ওঠে। এর একটা ইংরেজি শিরোনাম হতে পারে, ‘এক্সপ্লোর ইওর সারুনডিংস’।

কিছুদিন আগে আমি গিয়েছিলাম উর্মি পোল্ট্রি ফার্ম নামে সাইফুলের লেয়ার মুরগির খামারে। এটি সরকার বাড়ি, দক্ষিণ বোয়ালমারী, তেতুলিয়া পঞ্চগড়ে অবস্থিত। নিজস্ব পুঁজি ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, তেঁতুলিয়া শাখার বিনিয়োগ করা একটি ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান। 

বছর দুই আগের কথা। তখন আমি তেঁতুলিয়া শাখার ব্যবস্থাপক। ছোট খাটো একটা ছেলে, ছিপছিপে শরীর, পোশাক আশাক খুবই সাধারণ। অকপট, কোন ভনিতা ছাড়াই সরাসরি আমার চ্যাম্বারে এসে বললো- ‘স্যার, আমার ঋণ লাগবে।’

ব্যাংকিং সেক্টরে ঋণ বিতরণ করা একটা গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুকিপূর্ণ কাজ। আমি যেটা করি গ্রাহকদের সাথে অনেক গল্প টল্প করি। মাঝে মাঝে কিছু মৌলিক প্রশ্ন করে জানতে হয় তার আর্থিক সক্ষমতা। সরেজমিনে তদন্ত তো থাকেই। কিছুটা সাইকোলজিও প্রয়োগ করে বাজিয়ে দেখতে হয় গ্রাহককে। 

দেখলাম, সাইফুল কথা বলে সহজ ও স্বাভাবিক ভাবে। কোন বাহুল্য নেই। আর্থিক অবস্থার যেভাবে বর্ণনা দিলো, তাতে বুঝা গেলো ছেলেটি সৎ না হয়ে পারে না। সবচেয়ে চমৎকৃত হলাম তার আত্মবিশ্বাস দেখে। আমি বললাম, সাইফুল তোমার প্রজেক্ট দেখতে যাবো। তখন তার খামারে ছিলো প্রায় দুই হাজার লেয়ার মুরগি। খাঁচা, খাদ্য আর ওষুধ লেয়ার মুরগি পালন করতে গেলে এ তিনটি জায়গায় বেশি বিনিয়োগ দাবী করে। পরীক্ষা মূলক ভাবে ডোজ কমিয়ে একটা ছোট অঙ্কের ঋণ দিলাম। সারাবছর লেনদেন ভালোই করলো। ব্যবসার পরিসর বেড়ে গেলে। ঋণের প্রবাহ বাড়ানো হলো। এখন তার খামারে প্রায় ৯২০০ লেয়ার মুরগী। সে বললো, ‘স্যার, সে সময় আর্থিক সহযোগিতা না পেলে আজ এ জায়গায় পৌঁছাতে পারতাম না’।  

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এর একজন কর্মকর্তার কাছে কথাটা খুবই প্রেরণা মূলক এবং গর্ব করবার মতো তো বটেই। আমার খুব ভালো লাগলো। নানা কারণে ব্যাংকার সম্পর্কে সমাজে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। অথচ ব্যবসা বাণিজ্য আর আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে ব্যাংক শাখার বিনিয়োগ অন্যতম এক চালিকাশক্তি। নানাভাবে মানুষের উপকার করা গেলেও অর্থ দিয়ে উপকার করার মতো উপকার আর হয় না।

আত্মসম্মানবোধ ও আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে চাকুরি করলে আর মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা থাকলে ব্যাংকের চাকুরিও হয়ে ওঠে অনেক আনন্দের ও মর্যাদার। যতদিন এ পেশায় আছি সাইফুলদের খুঁজে খুঁজে বের করে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা গেলে এতে কর্ম ও আনন্দ দুই পাওয়া যায়। বিনিময়ে মেলে মানুষের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। মানুষ হিসেবে মানুষের প্রতি অকৃত্রিম যে ভালোবাসা- এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কী আছে?

আরএইচ/

কৃষি উদ্যোক্তা গল্প ব্যাংক ঋণ

সুখবর এর নিউজ পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

খবরটি শেয়ার করুন